দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ায় বন্দুক হামলার শিকার হয়েছে প্রেসিডেন্ট ইভান দুকেকে বহনকারী হেলিকপ্টার। ভেনেজুয়েলা সীমান্তের কাছে এ ঘটনা ঘটেছে স্থানীয় সময় শুক্রবার।
এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি ও তার সহযোগীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি গুলি ছোঁড়া হয়েছে। এতে কেউ হতাহত হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কলম্বিয়া নাকি ভেনেজুয়েলা থেকে হেলিকপ্টারটিতে গুলা করা হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কলম্বিয়ার কোনো প্রেসিডেন্টের ওপর প্রায় ২০ বছরে প্রথম হামলা এটি।
একে কাপুরুষোচিত হামলা আখ্যা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট দুকে। জানিয়েছেন, গুলিতে হেলিকপ্টারটির পেছনের অংশ ও পাখায় বেশ কয়েকটি ফুটো হয়েছে। এর ছবি প্রকাশ করেছে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়।
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সন্ত্রাসবাদ বা সহিংসতা আমাদের আতঙ্কিত করতে পারবে না। আমাদের দেশ কঠিন মনোবলের অধিকারী এবং এ ধরনের হুমকি শক্তি দিয়েই মোকাবিলা করবে কলম্বিয়া।’
হামলার সময় তার সঙ্গে ছিলেন কলম্বিয়ার প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভেনেজুয়েলা সীমান্তবর্তী নর্টে ডে সান্ট্যান্ডার প্রদেশের গভর্নর। সার্ডিনাটা শহর থেকে সীমান্তের কুকুতা শহরে যাচ্ছিলেন তারা।
হামলার পর হেলিকপ্টারটি ক্যামিলো দাজা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে।
এর আগে কাতাতুম্বো অঞ্চল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন দুকে। কোকা উৎপাদনকারী কলম্বিয়ার প্রধান অঞ্চল এটি। কোকার নির্যাস থেকে তৈরি হয় মাদকদ্রব্য কোকেইন। বিশ্বে কোকেইন উৎপাদনে শীর্ষ দেশ কলম্বিয়া।
ভেনেজুয়েলার সঙ্গে দীর্ঘ ও অরক্ষিত সীমান্ত অঞ্চল থেকে মাদক চোরাচালানের বিরুদ্ধে লড়াই করছে কলম্বিয়ার বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এর মধ্যে অন্যতম হলো নিষিদ্ধঘোষিত ফার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন গেরিলা সংগঠন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি।
দীর্ঘদিন ধরেই অঞ্চলটি সহিংসতাপ্রবণ। তার ওপর রক্ষণশীল দুকে ক্ষমতায় আসার পর কলম্বিয়া ও বামপন্থি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ভেনেজুয়েলার কূটনীতিতে ফাটল ধরে।
চলতি মাসেই কুকুতা অঞ্চলে একটি সামরিক ঘাঁটিতে গাড়িবোমা বিস্ফোরণে ৩৬ জন আহত হয়। এ হামলার জন্য ২০১৯ সালের শান্তি আলোচনা থেকে সরে দাঁড়ানো গোষ্ঠী ইএলএনকে দায়ী করে কলম্বিয়া।
কয়েক দশকের গৃহযুদ্ধে ইতি টানতে ২০১৬ সালে ফার্ক গেরিলাদের সঙ্গে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির পর অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছিল কলম্বিয়া সরকার।
শেষবার ২০০৩ সালে দেশটির তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান আলভারো ইউরিবকে লক্ষ্য করে এক বোমা হামলায় প্রাণ যায় কমপক্ষে ১৫ জনের। যদিও বেঁচে যান ইউরিব।
নেইভা শহরের বিমানবন্দরে ইউরিবকে বহনকারী একটি বিমান অবতরণের আগে সেখানে বিস্ফোরিত হয় আগে থেকে লুকিয়ে রাখা ২০ কেজি ওজনের একটি শক্তিশালী বোমা।
দুকের রাজনৈতিক গুরু ইউরিবকে হত্যাচেষ্টার জন্য দায়ী করা হয়েছিল ফার্ক গেরিলাদের।