ভারত সরকারের সঙ্গে টুইটারের সংঘাত দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এবার টুইটারের নিয়মজালে আটকে পড়লেন খোদ তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।
‘টেলিভিশন বিতর্ক থেকে নিজের ক্লিপ পোস্ট করে কপিরাইট আইন লঙ্ঘন করেছি— এই অভিযোগে টুইটার আমার অ্যাকাউন্ট আজ প্রায় এক ঘণ্টা ব্লক করে দিয়েছিল।’ এমন অভিযোগই সামনে আনলেন রবিশঙ্কর প্রসাদ। শুক্রবার এই অভিযোগ করেন তিনি।
জানা গিয়েছে, কপিরাইটের নিয়ম ভাঙার অভিযোগে তার অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে ব্লক করে দেয় টুইটার। একটি সংবাদমাধ্যমের বিতর্কমূলক অনুষ্ঠানের ক্লিপ শেয়ার করেছিলেন মন্ত্রী। আর তাতেই উঠেছে কপিরাইটের নিয়ম লঙ্ঘন করার অভিযোগ।
কেন্দ্রের সঙ্গে টুইটারের সংঘাত প্রথম নয়। চলতি মাসেই ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি নীতি না মানার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মার্কিন সংস্থাকে কড়া বার্তা দেন রবিশঙ্কর প্রসাদ।
কেন্দ্রের নয়া আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ভারতের সংস্কৃতি এর ভৌগোলিক অবস্থানের মতোই বিশাল। বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় সহযোগিতায় সামান্য বিষয়ও বড় আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষ করে ভুয়া খবরের ক্ষেত্রে। এই গাইডলাইন আনার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল এই বিষয়টি।’
তিনি টুইটারকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘টুইটার নিজেকে বাকস্বাধীনতার ধ্বজাধারী বলে মনে করতে পারে না। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ইচ্ছাকৃত এই গাইডলাইন অনুসরণ করেনি টু্ইটার। একই সঙ্গে ব্যবহারকারীদের সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন।
অভিযোগে রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছেন, আমেরিকার ডিজিটাল মিলেনিয়াম কপিরাইট আইন ভঙ্গ করা হয়েছে, এমন অভিযোগ এনে অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয়া হয়েছিল। ওই দিন যখন মন্ত্রী ও তার টিম লগ ইন করতে যান, তখন একটি বার্তা ভেসে ওঠে স্ক্রিনে। সেখানে লেখা ছিল, ‘আপনার টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে। আপনার পোস্ট করা কনটেন্টে ডিজিটাল মিলেনিয়াম কপিরাইট আইন লঙ্ঘিত হয়েছে।’
রবিশঙ্কর প্রসাদের পাল্টা দাবি, ‘টুইটারের এই পদক্ষেপ ভারতে আইটি আইন লঙ্ঘন করেছে। আইন অনুযায়ী আমার নিজের অ্যাকাউন্ট ব্লক করার আগে আমাকে একটি নোটিস দেয়া প্রয়োজন ছিল।’
চলতি মাসেই আইনি রক্ষাকবচ হারায় টুইটার। কেন্দ্রের নয়া তথ্য ও প্রযুক্তি আইন না মানায় সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থার থেকে আইনি রক্ষাকবচ তুলে নেয় কেন্দ্র।
অন্য দিকে, গাজিয়াবাদকাণ্ডে উত্তর প্রদেশ পুলিশের তরফে টুইটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। কেন্দ্রের তরফেও জানানো হয়েছে, ওই বিতর্কিত পোস্টটি যিনি করেছেন, তার পাশাপাশি টুইটারকেও আইনি শাস্তির মুখে পড়তে হবে। টুইটারের আইনি সুরক্ষা তুলে নেয়া নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ওঠে।
কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ তখন সাফ জানিয়েছিলেন, গত ২৬ মে কেন্দ্রের তরফে যে নয়া গাইডলাইন জারি করা হয়েছিল তা মানতে ব্যর্থ হয়েছে টুইটার। সোশ্যাল মিডিয়া ওই সংস্থাকে সুযোগ দেয়া হলেও তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই সেই নিয়ম মানেনি।