পশ্চিম তীরে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) কট্টর সমালোচক ও মানবাধিকারকর্মী নাইজার বানাতের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে তিনি মারা যান।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বানাতের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে।
চলতি বছরের ২২ মে ফিলিস্তিনে যে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, সেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন ৪৪ বছর বয়সী বানাত।
তবে পূর্ব জেরুজালেমে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের নির্বাচনে অংশ নেয়ায় অনিশ্চয়তা এবং নিজ দলের মধ্যে প্রার্থী নিয়ে মতবিরোধের কারণে এপ্রিলের শেষের দিকে নির্বাচন স্থগিত করেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট আব্বাস।
বানাত সব সময় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনা করতেন। তিনি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সহায়তা দেয়া বন্ধের জন্য সম্প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তার অভিযোগ ছিল, পশ্চিম তীরে কর্তৃত্ববাদ সম্প্রসারণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন সরকার।
পশ্চিম তীরের দক্ষিণাঞ্চলীয় হেবরন শহরের কর্তৃপক্ষ এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা বাহিনী বানাতকে গ্রেপ্তার করে। ওই সময় তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। একপর্যায়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
বানাতের মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি।
মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, হেবরন শহরে নিজ বাড়িতে ভোরবেলায় শুয়ে ছিলেন বানাত। ওই সময় প্রায় ২৪ জনের মতো পিএ কর্মকর্তা বাড়িতে ঢুকে তাকে পেটানো শুরু করেন। যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠা বানাতকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে বের করা হয়।
চলতি বছরের মে মাসের শুরুর দিকে বানাতের বাড়ি লক্ষ্য করে স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে একদল বন্দুকধারী। সে সময় তার স্ত্রী ও সন্তানরা ঘরে ছিলেন।
ওই হামলার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফাতাহ পার্টিকে দায়ী করেন বানাত। ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা বাহিনী পরিচালনার দায়িত্ব ফাতাহর।
মে মাসে বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বানাত বলেন, ‘ইউরোপীয়দের জানা উচিত, এ ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনকে (ফাতাহ) তারা পরোক্ষভাবে তহবিল পাঠাচ্ছে। ফাতাহর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণকারী ব্যক্তিদের দিকে ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা বাহিনী গুলি ছোড়ে।’
এদিকে পশ্চিম তীরের রামাল্লা শহরে পিএর নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে বানাতের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।