করোনাভাইরাসের টিকা না নিতে চাইলে যেতে হবে জেলে, এমন হুমকি দিয়েছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তে।
টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে সোমবার দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আপনার ইচ্ছা, টিকা নেবেন, নাকি জেলে যাবেন।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী ম্যানিলার বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে টিকাগ্রহীতার উপস্থিতি খুব কম বলে খবর প্রকাশের পরই এমন হুমকি দেন দুতের্তে।
তিনি বলেন, ‘আমাকে ভুল বুঝবেন না। এটা পুরো দেশের জন্য সংকট। এমন সময়ে সরকারের কথায় নাগরিকদের কান না দেয়া ভীষণ হতাশাজনক।’
এশিয়া মহাদেশে করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম ফিলিপাইন। দেশটিতে মহামারিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২৪ হাজার মানুষের। করোনা শনাক্ত হয়েছে সাড়ে ১৩ লাখের বেশি মানুষের।
১১ কোটি জনসংখ্যার দেশ ফিলিপাইনে চলতি বছরের মধ্যে ৭ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়েছিল দুতের্তে সরকার। কিন্তু ২০ জুন পর্যন্ত ফিলিপাইনে টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন মাত্র ২১ লাখ মানুষ। ফলে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা থেকে এখনও অনেক পিছিয়ে দেশটি।
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে কঠোর পদক্ষেপের জন্য বেশ সমালোচিত হয়েছেন দুতের্তে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলার বিষয়েও অনড় তিনি।
গত ৪ মে ম্যানিলার একটি কেন্দ্র থেকে চীনের সিনোফার্মের টিকা নেন দুতের্তে।
এদিকে, ফিলিপাইনে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) তদন্তের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দুতের্তে।
একই ভাষণে তিনি আইসিসিকে বলেন উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘শ্বেতাঙ্গদের কোনো অভিযোগের জবাব কিংবা সাফাই আমি কেন দেবো? ওরা উন্মাদ। খালি আবোলতাবোল বকে।’
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আইসিসির মুখপাত্র ফাদি আল আব্দাল্লাহ বলেন, ‘এই আদালত স্বতন্ত্র বিচারিক সংস্থা। কোনো রাজনৈতিক বিবৃতির জবাবে মন্তব্য করা আমাদের কাজের অংশ নয়।’
এর আগে দুতের্তের মাদকবিরোধী অভিযানের নামে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধানে আইসিসির কাছে অনুমতি চান এক কৌঁসুলি।
১২৩ দেশ নিয়ে গঠিত আইসিসির প্রতিষ্ঠাকালীন অন্যতম সদস্য ছিল ফিলিপাইন। ২০১৮ সালে আইসিসি থেকে দেশটির সদস্যপদ প্রত্যাহার করেন দুতের্তে।
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে ক্ষমতা গ্রহণের পরই মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করেন দুতের্তে, যাতে প্রাণ গেছে কয়েক হাজার মানুষের। বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাপী বিতর্কিত এ নেতা।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে সন্দেহের বশে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হচ্ছে অনেক মানুষকে। দুতের্তের দাবি, গ্রেপ্তারে বাধা ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণ করায় দমন করতে হয়েছে তাদের।