অস্ত্রবিরতি কার্যকরের এক মাস পর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে সীমিত আকারে বাণিজ্যিক পণ্য রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল।
শর্তসাপেক্ষে এ অনুমতি দেয়ার তথ্য সোমবার নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
গাজা থেকে সীমিত পরিমাণে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে অনুমোদন দেয়ার কথা রোববার প্রথম জানায় তেল আবিব।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি মূল্যায়নের পরই প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের সরকার এতে অনুমোদন দেয় এবং কার্যকর হয় এ পদক্ষেপ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা জানান, ৪০ দিনে প্রথমবার রপ্তানির উদ্দেশ্যে বস্ত্রবাহী ১১টি ট্রাক কার্ম আবু সালেম এলাকা ছেড়ে গেছে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের লিয়াজোঁ কমিটির কর্মকর্তা সালেহ আল-জেক জানান, বিধিনিষেধ খানিকটা শিথিল হওয়ায় গাজায় ডাক সেবা আবার চালু হতে যাচ্ছে।
১০ মে থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ১১ দিনের রক্তক্ষয়ী হামলার জেরে একরকম অচল হয়ে পড়ে অঞ্চলটির সব রকম কার্যক্রম।
২০ মে অস্ত্রবিরতি কার্যকরের পর প্রথম পাসপোর্টসহ আরও কিছু সেবা চালু হলেও অন্যান্যা খাতে বাকি বিধিনিষেধ বহালই থাকছে।
গাজা উপত্যকায় অবস্থিত একটি কারখানা সোমবার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কোমল পানীয় উৎপাদন ও বিপণন প্রতিষ্ঠান পেপসিকো। কার্যক্রম চালু রাখতে প্রয়োজনীয় কাঁচামালের সংকট দেখা দেয়ায় ছাঁটাই করা হচ্ছে ২৫০ কর্মীকে। অবরুদ্ধ পশ্চিম তীর থেকে তৈরি পণ্য আমদানির ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
কারখানার এক ব্যবস্থাপক জানান, ৬০ দিন অপেক্ষার পরও কার্বন ডাইঅক্সাইড ও সিরাপসহ অন্যান্য কাঁচামাল আমদানির অনুমতি পাওয়া যায়নি।
গাজা থেকে মাছ রপ্তানির অনুমতিও দেয়নি ইসরায়েল। এমনকি উপকূলে মাছ ধরার সীমানা ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
অসলো চুক্তিতে নির্দেশিত মাছ ধরার সীমানা গাজা উপকূল থেকে সমুদ্রের ৩৭ কিলোমিটার পর্যন্ত হলেও ফিলিস্তিনি জেলেদের মাত্র ১১ কিলোমিটার পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে তেল আবিব।
এ ছাড়া উন্নত চিকিৎসা নেয়ার জন্য গাজা থেকে ইসরায়েল ও পশ্চিম তীরে যাওয়া রোগীর সংখ্যাও বেঁধে দেয়া হয়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন ও গাজার শাসকদল হামাসের অভিযোগ, অবরুদ্ধ উপত্যকা অঞ্চলটির পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কোনো ইচ্ছে নেই ইসরায়েলের।
জাতিসংঘের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠকের পর হামাস নেতা ইয়াহিয়া আল-সিনওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈঠকে কিছুই ইতিবাচক হয়নি। তারা আমাদের সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলেও সংকট সমাধানের কোনো লক্ষণ দেখায়নি।’
সিনওয়ার জানান, ইসরায়েলের বিধিনিষেধ শিথিলের পদক্ষেপ এ অঞ্চলের পরিস্থিতি উন্নয়নে যথেষ্ট কার্যকর নয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি আর আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা প্রবেশে অব্যাহতভাবে বাধা দিয়ে যাচ্ছে তেল আবিব।