২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ইরানের সঙ্গে চলমান আলোচনা অনির্দিষ্টকাল ধরে চলতে পারে না বলে দেশটিকে সতর্ক করেছে তিন বিশ্বশক্তি।
ইরানকে স্থানীয় সময় রোববার এ সতর্কবার্তা দেয়া হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রক্ষণশীল ইব্রাহিম রাইসি জয়ী হওয়ার পর পরমাণু চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনায় বিরতি ঘোষণা করা হয়।
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রকে কীভাবে পরমাণু চুক্তিতে ফেরানো যায়, তা নিয়ে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির সঙ্গে আলোচনায় বসে চুক্তি স্বাক্ষরকারী পক্ষগুলো।
অবশ্য ২০১৮ সালে একতরফাভাবে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে আসায় আলোচনায় নেই দেশটির প্রতিনিধি দল।
চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পর ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ’ নীতির অংশ হিসেবে ইরানের ওপর একের পর এক অবরোধ আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরমাণু চুক্তির কিছু শর্ত অমান্য করা শুরু করে ইরান।
ভিয়েনায় রোববার পরমাণু চুক্তি ‘জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিপিওএ)’ নিয়ে ইরান, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি দলের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
তবে রক্ষণশীল ও পশ্চিমা দেশগুলোর কট্টর সমালোচক ইব্রাহিম রাইসি ৬২ শতাংশ ভোট পেয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার ঘটনায় ওই দিনের আলোচনা স্থগিত করা হয়।
পশ্চিমা দেশগুলো বলে আসছে, যতদিন ইরান পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন করবে ও নিষিদ্ধ পরমাণু উপাদান উৎপাদন অব্যাহত রাখবে ততদিন চুক্তিতে প্রত্যর্পণ কঠিন হয়ে পড়বে।
ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য নিয়ে গঠিত ‘ই৩’ গ্রুপের এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক রোববার বলেন, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে ফেরা নিয়ে ইরানের সঙ্গে পাঁচ বিশ্বশক্তির আলোচনা অনির্দিষ্টকাল ধরে চলতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে চুক্তি পুনরুদ্ধারে অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। তবে এখনও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমাধান বাকি। আমরা আগেই বলেছি, সময় কারোরও নেই। এই আলোচনা অনন্তকাল ধরে চলতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রতিনিধিরা এখন তাদের রাজধানীতে যাবেন। সব পক্ষকে ভিয়েনায় ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।’
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সালিভান এবিসি নিউজকে বলেন, ইরানের ওপর অবরোধ, পরমাণু কর্মসূচি সংক্রান্ত দেশটির অঙ্গীকারসহ অন্য আরও বিষয়ে মীমাংসা হয়নি। চুক্তিতে পৌঁছাতে এসব বিষয়ের সমাধান দরকার।
ইসরায়েলের নতুন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট রোববার ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রাইসির সমালোচনা করে বলেন, ইরানের সঙ্গে বিশ্বশক্তির পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখা ঠিক হবে না।