বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইরানের হবু প্রেসিডেন্ট কে এই রাইসি

  •    
  • ১৯ জুন, ২০২১ ২১:০৩

রাইসি ইরানের রাজনীতিতে চটকদারিত্বের জন্য বিখ্যাত নন। বরং বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে দেশের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জনপ্রিয় প্রচারের জন্য সুপরিচিত তিনি।

মাথায় কালো পাগড়ি ও ধর্মীয় পোশাক পরা কট্টর রক্ষণশীল ইব্রাহিম রাইসি কঠোর জীবনযাপনে অভ্যস্ত। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবসময় সোচ্চার তিনি।

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জয় পান ৬০ বছর বয়সী রাইসি। আগস্টে দেশটির মধ্যপন্থি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেবেন তিনি।

সমালোচকদের ভাষ্য, রাইসিকে জেতানোর জন্য তার শক্ত প্রতিপক্ষদের নির্বাচনে দাঁড়াতে দেননি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।

তবে পশ্চিমাদের টক্কর দিতে ও অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত দেশকে পুনরুদ্ধারে রাইসির বিকল্প নেই বলে মনে করেন তার সমর্থকেরা।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাইসি ইরানের রাজনীতিতে চটকদারিত্বের জন্য বিখ্যাত নন। বরং বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে দেশের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জনপ্রিয় প্রচারের জন্য সুপরিচিত তিনি।

নির্বাচনি প্রচারে রাইসি অঙ্গীকার করেছিলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার লড়াই জারি থাকবে।

পাশাপাশি নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য ৪০ লাখ ঘর নির্মাণ ও ‘শক্তিশালী ইরানের জন্য জনগণের সরকার’ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি সে সময় দেন তিনি।

ইরানের অনেক সংবাদমাধ্যম মনে করে, সামনের মাসে ৮২ বছরে পা দিতে যাওয়া সর্বোচ্চ নেতা খামেনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হতে পারেন রাইসি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ইরানের অন্যান্য রক্ষণশীলদের মতো রুহানি শিবিরের কড়া সমালোচনা করেন রাইসি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি রুহানির শান্তিপ্রয়াসী বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি মানেননি তিনি।

এ ছাড়া খামেনির যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতির সমর্থন করেন রাইসি।

তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র আস্থা রাখার মতো দেশ নয়। দেশটির অবরোধ তুলে ফেলার ওপর ইরানের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান নিহিত নয়। বরং স্বনির্ভর ও স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহ জোগানোর মধ্য দিয়ে ‘প্রতিরোধমূলক অর্থনীতি’ দাঁড় করানোই বেশি জরুরি।

অবশ্য ইরানের রাজনীতিকদের মতো রাইসিও মনে করেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তোরণে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার দরকার রয়েছে।

ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পবিত্র শহর মাশহাদে ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন রাইসি। তরুণ বয়সেই উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি হয় তার।

১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত রাজতন্ত্রকে ক্ষমতাচ্যুত করে ইরানের ইসলামিক বিপ্লব। সে সময় রাইসির বয়স ছিল মাত্র ২০ বছর। রাজধানী তেহরানের উপকণ্ঠে আলবোর্জ প্রদেশের রাজধানী খারাজের প্রসিকিউটর-জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান রাইসি।

১৯৮৮ সালে মার্ক্সবাদী ও বামপন্থিদের গণফাঁসির ঘটনায় অবধারিতভাবেই রাইসির নাম নেন অধিকার সংগঠন ও ইরান থেকে নির্বাসিত বিরোধী মতাবলম্বী ব্যক্তিরা। রাইসি সে সময় তেহরানের রেভ্যুলুশনারি কোর্টের ডেপুটি প্রসিকিউটর ছিলেন।

২০১৮ সালে এমনকি গত বছরও রাজবন্দিদের গণফাঁসির বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে রাইসি তার সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেন।

আশির দশকের গণফাঁসি ও পরবর্তী সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে রাইসিসহ কয়েকজনের ওপর ২০১৯ সালে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।

রাইসির বিচারিক অভিজ্ঞতা কয়েক দশকের। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেল ছিলেন তিনি।

২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত উপপ্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন রাইসি। ২০১৪ সালেই ন্যাশনাল প্রসিকিউটর-জেনারেল হন তিনি।

রাইসির জীবনীতে বলা রয়েছে, সর্বোচ্চ নেতা খামেনির অধীনে ধর্মতত্ত্ব ও ইসলামিক আইনশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।

২০১৬ সালে রাইসিকে একটি দাতব্য সংস্থার প্রধান করেন খামেনি। সংস্থাটি মাশহাদ শহরের ইমাম রেজার মাজার পরিচালনার পাশাপাশি ইরানের বড় শিল্পও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

তিন বছর পর ২০১৯ সালে রাইসিকে ইরানের প্রধান বিচারপতি করেন খামেনি। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা মনোনয়ন দেয়া বিশেষজ্ঞ কমিটিরও সদস্য রাইসি।

তেহরানের শাহিদ-বেহেশ্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক জামিলেহ আলামোলহোদাকে বিয়ে করেন রাইসি। তাদের দুটি মেয়ে আছে।

এ বিভাগের আরো খবর