উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার দেশ ‘আলোচনা কিংবা বোঝাপড়া’ দুটোর জন্যই প্রস্তুত আছে। ‘বিশেষভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত’ থাকার কথা বলেছেন কিম।
প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি এমন মন্তব্য করলেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম বৃহস্পতিবার পিয়ংইয়ংয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
উত্তর কোরিয়ায় এক সপ্তাহের জন্য শুরু হয়েছে ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলন।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন এর আগে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ প্রচেষ্টা নিলেও তাতে খুব বেশি আগ্রহী ছিল না পিয়ংইয়ং।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনও কিমের বরাতে জানিয়েছে, তাদের ‘বিশেষ করে, রাষ্ট্রের মর্যাদা রক্ষা ও স্বাধীন বিকাশে স্বার্থ রক্ষায় তার দেশ বোঝাপড়ার জন্য প্রস্তুত’ রয়েছে।
পাশাপাশি তারা একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এবং উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার জন্য যেকোনো কিছু মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকার কথাও বলেছে।
তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়াবিরোধী যেকোনো তৎপরতায় তার দেশ ‘তীব্র ও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া’ দেখাবে। সেই সঙ্গে কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ মনোযোগ দেবে।
কিমের বক্তব্যটি এমন এক সময় এলো, যখন তার দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে বলে স্বীকার করেছেন।
কিম জং উনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বরাবরই উত্তেজনার। বিশেষ করে পরমাণু অস্ত্র তৈরি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার দীর্ঘদিন থেকেই উত্তর কোরিয়ায় অবরোধ দিয়ে রেখেছে।
এতে অর্থনৈতিকভাবে চরম খারাপ অবস্থায় পড়েছে উত্তর কোরিয়া। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকটের মতো পরিস্থিতি। দেশটির বেশির ভাগ খবরই বাইরের কোনো দেশে জানতে দেন না কিম জং উন প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নে এর আগে উদ্যোগ নিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সেই উদ্যোগে ট্রাম্প দুইবার কিমের সঙ্গে সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামে বৈঠক করেন। তবে শান্তি আলোচনা আর খুব বেশি এগোয়নি।
চলতি বছর জো বাইডেন ক্ষমতা নেয়ার পর বিশ্ব শান্তির জন্য উত্তর কোরিয়াকে গুরুতর হুমকি বলে বিবৃতি দেন। এমনকি ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে কিম সামরিক বাহিনীর বিশাল আকারে প্যারেড করে।
বাইডেন প্রশাসন বলছে, কোরিয়া উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত রাখতে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।