সৌদি আরবে কিশোর বয়সে গ্রেপ্তারের ছয় বছর পর এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
কিশোর বয়সে করা অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে না বলে সৌদি প্রশাসনের আশ্বাস সত্ত্বেও কার্যকর হলো এ সাজা।
এ ধরনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড দেবে বলে গত বছর জানিয়েছিল রিয়াদ।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০১৫ সালে এক বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল মুস্তাফা হাশেম আল-দারবিশকে। সে সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর। দাম্মামে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় বয়স হয়েছিল ২৬ বছর।
তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও সশস্ত্র বিদ্রোহ উসকে দেয়ার অভিযোগ প্রশাসনের।
কিন্তু মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর দাবি, দারবিশ সুষ্ঠু বিচার পাননি। তার মৃত্যুদণ্ড বন্ধের চেষ্টাও করেছিল বিভিন্ন সংগঠন।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও মৃত্যুদণ্ডবিরোধী দাতব্য সংস্থা রিপ্রাইভ জানিয়েছে, দারবিশ নিজের স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করেছিলেন বলে অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
এ অভিযোগের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি সৌদি প্রশাসন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আল-দারবিশের বিরুদ্ধে বিভেদ ছড়ানো ও নিরাপত্তা বাহিনীর শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ ছিল।
তার বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয় একটি ছবি, যার মাধ্যমে দাবি করা হয়, তিনি ‘নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আক্রমণাত্মক আচরণ করেছিলেন’।
২০১১ ও ২০১২ সালে ১০টির বেশি ‘দাঙ্গা জাতীয়’ কর্মসূচিতে তিনি অংশ নেন বলেও রয়েছে অভিযোগ।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যার চেষ্টা করেছিলেন দারবিশ।
কিন্তু আদালতের নথিতে তার কথিত এসব অপরাধের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ বা বিস্তারিত উল্লেখ নেই বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
চলতি বছরের শুরুতে সৌদি আরবের মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছিল, ২০২০ সালের তুলনায় এ বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনবে দেশটি।
কিন্তু ২০২০ সালে সৌদি আরবে যতগুলো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল, ২০২১ সালের ছয় মাস পার না হতেই একইসংখ্যক মৃত্যুদণ্ড দেশটিতে কার্যকর হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে রিপ্রাইভ।