আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত পিকে হিসেবে পরিচিত রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটির (আইপ্যাক) সঙ্গে কাজ করবে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল চাইছে পিকের হাত ধরে পুরো ভারতে বাংলা জয়ের ধারা বজায় থাকুক দলটির।
তৃণমূলের একটি বিশ্বস্ত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপর্যয়ের পর দলটির সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো ও যুবনেতা অভিষেক ব্যানার্জি প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের দ্বারস্থ হন। উদ্দেশ্য ছিল বিজেপির উত্থান ঠেকিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে আবারও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় আনা।
বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ জমেছিল তৃণমূলের একাংশে। কেউ কেউ কটাক্ষ করেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রশান্ত কিশোরের তত্ত্বাবধানে তৃণমূলের অভূতপূর্ব সাফল্য প্রমাণ করেছে সদ্য নির্বাচিত তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি কতটা সঠিক ছিলেন।
২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে প্রশান্ত কিশোরের ভবিষ্যৎবাণী ছিল তৃণমূল কংগ্রেস ২০০ এর বেশি আসনে জিতবে। অন্যদিকে ১০০ এর গণ্ডিও ছাড়াতে পারবে না বিজেপি। পিকের কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেছে। তিনি বলেছিলেন, ‘আমার কথা যদি ভুল হয় রাজনৈতিক পরামর্শদাতার পেশা ছেড়ে দেব।’
২০১৫ সালে বিহারের নীতীশ কুমারের সাফল্য এনে দিয়ে ছিলেন প্রশান্ত কিশোর। এরপর অন্ধ্রপ্রদেশের জগমোহন রেড্ডি, তামিলনাড়ুর এম কে স্ট্যালিন, দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল তার হাত ধরে জয় পেয়েছেন ।
আসন্ন পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে কাজ করছে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক। ২০১৭ সালেও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংয়ের নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্বে ছিল সংস্থাটি।
পশ্চিমবঙ্গের ‘দিদিকে বল’ সাধারণের অভাব অভিযোগ শুনে সুরাহা দেয়া বা ‘দুয়ারে সরকার’, ‘পাড়ায় পাড়ায় সমাধান’, ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কিংবা ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’ এইসব প্রচার আর পরিষেবা কর্মসূচি বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় আইপ্যাকের হাত ধরে।
এর ফল হাতে হাতে ভোটের বাক্সে পেয়েছে তৃণমূল। ২০২৪ সালে লোকসভা এবং ২০২৬ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের সঙ্গে কাজ করে বাংলা জয়ের ধারা বজায় রাখতে চাইছে দলটি।