দেশের কৃষকদের প্রতি বিজেপি সরকারের উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সিঙ্গুর জমি আন্দোলনের দশ বছর পূর্তিতে এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, ‘কেন্দ্রের উদাসীনতার কারণে দেশের কৃষকরা দুর্দশায় রয়েছেন। তা আমাকে ব্যথিত করেছে। আসুন সমাজের মেরুদন্ড কৃষক শ্রেণীর উন্নয়নের স্বার্থে এক হয়ে লড়াই করি। তাদের ন্যায্য অধিকার পাইয়ে দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হোক।’
পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ইতিহাসে সিঙ্গুর আন্দোলন একটি ঐতিহাসিক অধ্যায়। সিঙ্গুর আন্দোলনের দশ বছর পেরিয়ে গেলেও কৃষকদের অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
দশ বছর আগে আজকের দিনে ২০১১ সালে সিঙ্গুর জমি রক্ষায় বিল পাস হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় । মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ টুইটে লেখেন, ‘কৃষকদের জীবনে সেই ঘটনা বড়সড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল।’
২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো গাড়ি তৈরি প্রকল্পের কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রাজ্য সরকার টাটাদের জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু করলে কিছু কৃষক জমি দিতে অস্বীকার করেন। জমিতে দিতে অনিচ্ছুক সেই কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে আন্দোলন করেন তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি।
ওই আন্দোলনের জেরে বহুজাতিক কোম্পানি টাটা পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাদের প্রকল্প গুটিয়ে অন্য রাজ্যে সরিয়ে নেয়। মনে করা হয়, সিঙ্গুর আন্দোলনের জন্য মমতার পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠন সহজ হয়েছিল ।
ক্ষমতায় এসে তৃণমূল নেত্রীর দেয়া ওই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিল রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার । সরকার গঠনের পর প্রথম মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে সিঙ্গুরের কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল। এরপর সিঙ্গুরের জমি সুরক্ষায় বিল পাস করা হয় বিধানসভায়।
কয়েকদিন আগে দিল্লির কৃষক আন্দোলনের অন্যতম নেতা রাকেশ টিকায়েতের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করে বিজেপি সরকারের জনবিরোধী কৃষিনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে মমতাকে নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বান জানান।