ভারতের অসমে জমি দখল ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য মুসলিমদের দায়ী করেই বিতর্ক উসকে দিলেন রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
বৃহস্পতিবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘জমি দখলের মতো নানা সামাজিক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে যদি অভিবাসী মুসলিমরা পরিবার পরিকল্পনা মেনে চলে।’
গুয়াহাটিতে ওই বৈঠকে জমি পুনরুদ্ধার অভিযানে মুসলিমদের বেঘর করে দেয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাইরে থেকে আসা মুসলিমরা যদি পরিবার পরিকল্পনা অনুসরণ করে এবং নিজেদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে, তবে কোনও সমস্যাই থাকবে না। যদি এভাবেই জনবিস্ফোরণ ঘটতে থাকে, তবে একদিন কামাক্ষ্যা মন্দিরের জমিও দখল হয়ে যাবে, এমনকি আমার বাড়িও দখল হয়ে যাবে।’
অসমের মোট জনসংখ্যার ৩১ শতাংশ মুসলিম হলেও বাংলাভাষী মুসলিমরা মূলত বাংলাদেশ থেকে আসা। গত বিধানসভা নির্বাচনেও রাজ্যের ভূমিপুত্রদের সংরক্ষণ ও জমি দখল করাকেই হাতিয়ার বানিয়ে প্রচার চালিয়েছিল বিজেপি।
রাজ্যে ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য মুসলিম পরিবারগুলোকে দোষারোপ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গত বিধানসভাতেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রয়োগ করেছিলাম। তবে বর্তমানে আমরা বিশেষ করে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা কমানোর ওপরই নজর দিতে চাই। আমরা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বহু সামাজিক সমস্যা দূর করা যাবে। তাই মুসলিমদের কাছে এটি আমার বিনীত অনুরোধ।’
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে অসন্তুষ্ট বিরোধী পক্ষ। এআইইউডিএফের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়কে আক্রমণ করেই বলা হয়েছে। সরকারের তরফে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে নীতি অনুসরণ করা হলে আমরা কখনও তার বিরোধিতা করিনি। ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দারিদ্র্য ও অশিক্ষাই দায়ী, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এই দুটি বিষয় নিয়ে কোনো কথা বললেন না।’