ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাখোঁকে চড় মারার অপরাধে ২৮ বছর বয়সী দেমিয়েন তারেলকে চার মাসের জেল দিয়েছে দেশটির একটি আদালত।
মোট ১৮ মাস বা দেড় বছরের জন্য কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হলেও মওকুফ করা হয়েছে ১৪ মাসের সাজা।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রেসিডেন্টকে চড় মারা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল না বলে আদালতকে জানিয়েছেন ওই যুবক।
ফ্রান্সের ড্রোম অঞ্চলে সফররত মাখোঁ জনতার সঙ্গে হাত মেলানোর সময় ভিড়ের মধ্য থেকে তাকে চড় মারেন তারেল। মঙ্গলবারের ওই ঘটনার পর থেকেই পুলিশের হেফাজতে আছেন তিনি।
তার শুনানির দিন বৃহস্পতিবার সরকারি পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতি এ ধরনের আচরণ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সহিংসতা’।
জবাবে প্রেসিডেন্ট সফর করবেন জেনে কয়েক দিন আগে তাকে ডিম বা ক্রিম ছোড়ার কথা ভেবেছিলেন বলে জানিয়েছেন তারেল। তবে চড় মারার কোনো পূর্ব পরিকল্পনা ছিল না তার।
আদালতকে তারেল বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট মাখোঁ খুব নিখুঁতভাবে আমাদের দেশের ক্ষতি করে চলেছেন বলে আমি মনে করি। তাকে যদি আমি দ্বৈত লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জ জানাতাম, তাহলে তো তিনি আসতেন না।’
সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছনার অপরাধে ফ্রান্সে সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৪৫ হাজার ইউরো জরিমানা।
মাখোঁর প্রতিক্রিয়া
চড় খাওয়ার ঘটনাটিকে ‘বিচ্ছিন্ন’ উল্লেখ করে মাখোঁ জানিয়েছেন, ভোটারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ অব্যাহত থাকবে তার।
ওই যুবকের আচরণকে ‘বোকামি আর উগ্রতা’ আখ্যা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে বিষ ছড়ানো হয়, তারই ফল এটি। এ ধরনের আচরণ এখন আর অপ্রত্যাশিত নয়। কিন্তু এটি অগ্রহণযোগ্য।
ফ্রান্সে স্থানীয় নির্বাচনের বাকি কয়েক সপ্তাহ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি ১০ মাস।
অনেক রাজনীতিবিদ এ লাঞ্ছনার নিন্দা জানালেও কেউ কেউ একে দেখছেন ফ্রান্সের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্টকে জনতার প্রত্যাখ্যান হিসেবে।
২০১৮ ও ২০১৯ সালের বড় সময়জুড়ে ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলনে জর্জরিত হয় ফ্রান্স।
মাখোঁর অর্থনৈতিক সংস্কারমূলক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ওই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও দ্রুতই তা গড়ায় সরকারবিরোধী গণ-আন্দোলনে এবং পরিস্থিতি ব্যাপক সহিংস হয়ে ওঠে।
সম্প্রতি নানা ঘটনায় জনসমর্থন কিছুটা বাড়ায় ৪৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যদিও জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বী কট্টর ডানপন্থি মেরি ল্যু পেনের সঙ্গে তার জনসমর্থনের পার্থক্য খুবই কম।