ভারতে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের তালিকায় যোগ হয়েছে ৬ হাজার ১৩৮ জনের নাম, মহামারির দেড় বছরে যা সর্বোচ্চ।
বিহার রাজ্য সরকার মহামারিতে প্রাণহানির সংশোধিত তালিকা প্রকাশের ফলে এক দিনে মৃত্যুর রেকর্ড হয় ভারতে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিহারে মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ছিল সাড়ে ৫ হাজার। বুধবার সংশোধনী প্রকাশের পর এক দিনের ব্যবধানে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ হাজার ৪২৯ জনে।
মৃতের তালিকায় নতুন করে যোগ হয়েছে ৩ হাজার ৯৫১ জনের নাম।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে আগের ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ২১৯ জনের মৃত্যু হয়। এর সঙ্গে বিহারের সংখ্যাটি যুক্ত হয়ে এক দিনে মৃত্যু ৬ হাজার ছাড়ায়।
দীর্ঘ মহামারিতে ভারতে এ পর্যন্ত প্রাণহানি ৩ লাখ ৬০ হাজারের কাছাকাছি। আর করোনা শনাক্ত হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৯২ লাখ মানুষের দেহে। ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ৯৪ হাজার।
করোনায় প্রাণহানিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় এবং শনাক্তের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ ভারত।
মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কায় এপ্রিল-মে মাসে বিপর্যয়ের চরমে পৌঁছে যায় ভারত। দিনে চার হাজারের বেশি মৃত্যু আর কয়েক লাখ মানুষের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হচ্ছিল তখন।
মে মাসের শেষ সপ্তাহে দৈনিক মৃত্যু ও সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা কমতে শুরু করে। এ ধারা জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহেও নিম্নমুখী।
এমন পরিস্থিতিতে ভারতে মহামারির তৃতীয় ধাক্কার শঙ্কা জোরালো হতে থাকায় এবার আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছে দেশটির সরকার।
এর মধ্যে অন্যতম হলো আগামী ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের লক্ষ্যে দিনে ৫ হাজার টন অক্সিজেন উৎপাদন করা।
রোগ প্রতিরোধে টিকা কার্যক্রমের গতি বাড়িয়েছে সরকার। বুধবার টিকা নিয়েছেন প্রায় ৩৪ লাখ ভারতীয়।
এর মাধ্যমে ১৩৩ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে এ পর্যন্ত টিকার আওতায় আসা মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল সোয়া ২৪ কোটিতে।
এদের মধ্যে ৪ কোটি ৭০ লাখের বেশি মানুষ দুই ডোজই নিয়েছেন। বাকিরা নিয়েছেন শুধু প্রথম ডোজ।
সর্বোচ্চ টিকা দানকারী দেশের তালিকায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পর তৃতীয় অবস্থানে ভারত।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, টিকা কার্যক্রমের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার কমছে।
শনাক্তের হার বুধবার নেমে এসেছে ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশে। টানা তৃতীয় দিনের মতো এ হার ৫ শতাংশের নিচে ছিল।
দিনের সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে তামিলনাড়ু, কেরালা, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে।