রাশিয়ায় নিষিদ্ধ হলো কারাবন্দি প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির প্রতিষ্ঠিত তিনটি সংগঠন।
‘উগ্রবাদী’ বিবেচনায় বুধবার সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মস্কোর নগর আদালত।
নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনগুলো হলো ফাউন্ডেশন ফর ফাইটিং করাপশন (এফবিকে) ও নাভালনির বিভিন্ন আঞ্চলিক কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ১৩ ঘণ্টার দীর্ঘ শুনানি শেষে রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এর ফলে এসব সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা স্থানীয় বা সাধারণ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না।
এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞার ফলে এসব সংগঠনের সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক বা অধিকারকর্মী, অর্থদাতা বা যেকোনোভাবে যুক্ত যেকোনো ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় নেয়া হতে পারে; দীর্ঘদিন কারাভোগও করতে হতে পারে তাদের।
রাশিয়ায় বর্তমানে ‘উগ্রবাদী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছে ৩০টির বেশি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে আছে জঙ্গি সংগঠন আইএস, আল-কায়েদাও।
নাভালনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনকারী কৌঁসুলিদের মুখপাত্র অ্যালেক্সেই জাফইয়ারোভ বলেন, ‘এসব সংগঠন তথ্য পাচার করত বলে প্রমাণ মিলেছে। এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত ছিল সংগঠনগুলো।’
গত কয়েক বছরে রাশিয়ার শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বড় বড় দুর্নীতির খবর বের করে এনেছে নিষিদ্ধঘোষিত এফবিকে। নাভালনির প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটির এসব অনুসন্ধানের ফলে দেশজুড়ে গণআন্দোলনে ব্যাপক চাপে পড়েছিল পুতিন প্রশাসন।
এ অবস্থায় রাশিয়ায় সাধারণ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এ রায় পুতিনবিরোধীদের দমনের পদক্ষেপ বলে অভিযোগ নাভালনির সমর্থকদের।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পুতিনকে টেক্কা দিতে দীর্ঘ প্রচেষ্টায় যে রাজনৈতিক অবকাঠামো গড়ে তুলেছিলেন নাভালনি, সেগুলোকে অকার্যকর করে দিতেই এ ধরনের রায় দেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইউরোপের অন্যতম দীর্ঘমেয়াদি শাসক পুতিনের কট্টর সমালোচক নাভালনি পাঁচ মাস ধরে কারাবন্দি।
বিষাক্ত রাসায়নিক প্রয়োগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে জার্মানি থেকে দীর্ঘ চিকিৎসা নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে রাশিয়ায় ফেরেন নাভালনি। এর পরই গ্রেপ্তার করা হয় ৪৪ বছর বয়সী এই রাজনীতিককে।
পুতিন সরকারই তাকে বিষপ্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ক্ষমতাসীনরা।