বিশ্বজুড়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনায় ব্যবহার করা অ্যাপ হ্যাক করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা। এর মাধ্যমে অপরাধীদের লাখ লাখ এনক্রিপ্টেড মেসেজ পড়ে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়ার কাজ চলছে।
এসব ম্যাসেজের ভিত্তিতে এরই মধ্যে ১৮টি দেশ থেকে আট শর বেশি সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার। কয়েক টন মাদক দ্রব্যও উদ্ধার করা হয়েছে অভিযানে।
অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তাদের বরাতে মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, বৈশ্বিক মাদক বাণিজ্যে জড়িত অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অপরাধীদের ধরছে অস্ট্রেলীয় পুলিশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই)।
বিশেষায়িত এনক্রিপ্টেড নেটওয়ার্কের খোঁজ পেতে এফবিআই পরিচালিত এ অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে, ‘অপারেশন ট্রোজান শিল্ড’। সমন্বিত এই বৈশ্বিক অভিযানকে সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম বড় পরিসরের অভিযান বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে অভিযানে অস্ট্রেলিয়ায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ২২৪ জনঅস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী সংঘবদ্ধ অপরাধের ওপর বেশ বড় আঘাত হেনেছে এই অভিযান।
‘অস্ট্রেলিয়ার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ইতিহাসে এটি স্মরণীয় মুহূর্ত।’
অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় পুলিশ কমিশনার রিস কেরশ জানান, তাদের দেশে অভিযানে নিষিদ্ধ মোটরসাইকেল গ্যাংয়ের সদস্যসহ ২২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিউজিল্যান্ডে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩৫ জন।
ইউরোপে এরই মধ্যে সুইডেনের ৭৫ জন সন্দেহভাজন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জার্মানিতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬০ জন। ৪৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন নেদারল্যান্ডসে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করবে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ইউরোপল ও এফবিআই।
অস্ট্রেলিয়ায় অভিযানে উদ্ধার হয়েছে বিপুল মাদক২০১৮ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রকে ধরতে অভিযানের পরিকল্পনা করে অস্ট্রেলীয় পুলিশ ও যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই। চক্রটি তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে যে অ্যাপ ব্যবহার করত, হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সেই অ্যানম ম্যাসেজিং অ্যাপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
অস্ট্রেলিয়ার আন্ডারওয়ার্ল্ডে জড়িতরা অ্যানম অ্যাপযুক্ত কাস্টমাইজড ফোন যোগাযোগের স্বার্থে সহযোগীদের সরবরাহ করত। তাদের ধারণা ছিল, এ ব্যবস্থা নিরাপদ কারণ ফোনগুলোতে ম্যাসেজ অপশন ছাড়া অন্য কোনো (ক্যামেরা বা ভয়েস) অপশন নেই। আর অ্যাপটি ছিল এনক্রিপ্টেড।
অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ কমিশনার রিস কেরশ বলেন, ‘ম্যাসেজিং অ্যাপে অপরাধীরা মাদক, সহিংসতা, একে অপরকে আঘাত, খুন হতে যাওয়া নিরপরাধ ব্যক্তিদের নিয়ে কথা বলত।’