সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফেরা নিয়ে মাথাব্যথা নেই যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের।
নর্থ ক্যারোলাইনার গ্রিনভিলে রিপাবলিকান পার্টির হয়ে করা জনসমাবেশে শনিবার এ কথা বলেন তিনি।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের ওপর দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা জারি রাখার ঘোষণা দেয়ার এক দিন পরই বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘হয়তো দুই বছর পর ফেসবুক আমাকে তাদের মঞ্চে ফিরতে দেবে। কিন্তু আমার তাতে খুব একটা আগ্রহ নেই।’
ওই সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গকে ‘সৌন্দর্যের প্রতিমূর্তি’ বলে তাচ্ছিল্য করেন তিনি।
ফেসবুকের পক্ষ থেকে শুক্রবার জানানো হয়, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টটি স্থগিত করা হয়। সে সময় থেকে শুরু করে পরবর্তী দুই বছর পর্যন্ত, অর্থাৎ ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয়ের পর ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল হিলে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের দাঙ্গা উসকে দেয়াকে ‘নীতিমালার চরম লঙ্ঘন’ হিসেবে দেখছে ফেসবুক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যে পরিস্থিতিতে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল, সেটির গুরুত্ব বিবেচনায় ট্রাম্পের কর্মকাণ্ড আমাদের নীতিমালার চরম লঙ্ঘন। ট্রাম্পের দেখানো পথে ভবিষ্যতে যদি কেউ না হাঁটেন এবং বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেন, তা নিশ্চিতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা সঠিক বলে মনে করছি আমরা।’
নির্দিষ্ট সময় পর ট্রাম্পের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করবে ফেসবুক। যদি আবারও তিনি এমন ঘটনা ঘটান, তাহলে ফেসবুক থেকে স্থায়ীভাবে মুছে দেয়া হতে পারে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ও পেজ।
ফেসবুকের এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ কট্টর ট্রাম্প সমর্থকরা।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সহিংসতা ও বিদ্বেষ উসকে দেয়ার অভিযোগে ফেসবুক-টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ হলেও রিপাবলিকান সমর্থকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা কমেনি ট্রাম্পের।
ট্রাম্পের সমাবেশের ১ হাজার ২৫০ টিকেটের সবগুলোই বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি জানতাম এমনটাই ঘটবে। কানায় কানায় পূর্ণ থাকবে এ হল। সব রেকর্ড ভেঙে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়ার মানুষ আমি নই; বরং মনে রাখবেন, আমিই এ দেশের গণতন্ত্রের রক্ষক।’
ফেসবুকের ইতিহাসে ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান যার অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয়া হয়েছে। ইনস্টাগ্রাম আর টুইটারেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাকে।
এ অবস্থায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে দ্রুততম সময়ে যোগাযোগ স্থাপনে নিজের ওয়েবসাইট খুলেছিলেন ট্রাম্প। ওয়েবসাইটটির ব্লগ বিভাগে তার প্রেসিডেন্ট-পরবর্তী সময়ের পোস্টগুলো প্রকাশ হচ্ছিল।
কিন্তু প্রায় এক মাস অব্যবহৃত থাকার পর গত সপ্তাহে বন্ধ হয়ে যায় সেটিও।