কম্বোডিয়াজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁতে রাখা স্থলমাইন পাঁচ বছর ধরে সাফল্যের সঙ্গে খুঁজে বের করা মাগাওয়া নামের আলোচিত ইঁদুর এবার অবসরে যাচ্ছে। মানুষের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি সাহসিকতার জন্য সোনার মেডেলও পেয়েছিল এই ‘বীর ইঁদুর’।
স্থলমাইন ও যক্ষ্মার জীবাণু শনাক্তে ইঁদুরদের প্রশিক্ষণ দেয়া যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন এপিওপিও জানিয়েছে, কর্মজীবনে ৭১টি স্থলমাইন ও ৩৮ ধরনের অবিস্ফোরিত বোমার সন্ধান দেয় মাগাওয়া।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বীরত্বের স্বীকৃতি দিতে মাগাওয়াকে সোনার মেডেল দেয় যুক্তরাজ্যভিত্তিক পশুবিষয়ক দাতব্য সংস্থা দ্য পিপলস ডিসপেন্সারি ফর সিক অ্যানিমেলস (পিডিএসএ)।
এপিওপিওর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘পরিশ্রমী ইঁদুরটি চলতি বছরের শেষের দিকে সাত বছরে পা দেবে। বিগত কয়েক বছর অনেক কাজ করেছে এটি। এখন বিশ্রামের প্রয়োজন।
‘মাগাওয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো। তবে সে অবসরের সময়ে পৌঁছেছে। তার কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। এখনই তার অবসরে যাওয়া দরকার।’
কম্বোডিয়ার ২ লাখ ২৫ হাজার বর্গমিটার মাটি স্থলমাইন ও বোমামুক্ত করতে এপিওপিওকে সহায়তা করে মাগাওয়া।
আকারে গড়পড়তা ইঁদুর থেকে বড় মাগাওয়ারা। এদের আদিবাস আফ্রিকায়। আফ্রিকান জায়ান্ট পাউচড গোত্রের ইঁদুর মাগাওয়া। এরা সাধারণত বুদ্ধিমান হয়। আকৃতি বা ওজন অন্যান্য ইঁদুরের চেয়ে বেশি হলেও চলাফেরায় এরা সাবধানী। কখনও স্থলমাইনে পা দেয় না।
বিশেষ এ গুণের কারণে মাগাওয়া ও তার মতো অন্যান্য ইঁদুরকে প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করে এপিওপিও। স্থলমাইনে ব্যবহৃত বিস্ফোরক ক্যামিক্যালের গন্ধ শোঁকার মাধ্যমে স্থলমাইন শনাক্ত করা এবং স্থলমাইনের অবস্থানের বিষয়ে জানান দেয়া প্রশিক্ষণের প্রধান কাজ।
কম্বোডিয়ার স্থানীয় জনগণকে তাদের জীবন বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারানোর ভীতি ছাড়াই সুস্থভাবে জীবনধারণে সহযোগিতা করায় মাগাওয়ার প্রশংসা করে এপিওপিও। খুব অল্প বয়স থেকে এ ধরনের ইঁদুরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় বিমান থেকে কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও লাওসজুড়ে মাইন ফেলেছিল পরাশক্তি দেশগুলো, যার অনেকগুলো এখনও দেশগুলোতে রয়েছে। প্রায়ই মাইনগুলোর বিস্ফোরণে অনেকের প্রাণ যায়।