ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এবারের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস অভাবনীয় ফল করেছে।
মোদি-শাহ জুটির ২০০ আসনে জিতে রাজ্যে সরকার গড়ার হুংকারকে ৭৭ আসনে গুঁড়িয়ে দেয় তৃণমূল। দলটি একাই ২১২ আসনে জিতে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে।
নির্বাচনের মাধ্যমে তৃণমূল নেত্রী মমতার বাংলা জয় হয়। এবার দিল্লি জয়ের প্রস্তুতিতে শনিবার বেলা ৩টায় তৃণমূল ভবনে দলের সাংগঠনিক বৈঠক ডেকেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে সংগঠন মজবুত করতে দলের সংসদ সদস্য, বিধায়ক, জেলা সভাপতিদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোরেরও সেখানে থাকার কথা জানা গেছে।
সূত্রের খবর, সংগঠন ঢেলে সাজাতে এক পদ, এক ব্যক্তি, নীতি গ্রহণ করা হতে পারে। জেলা স্তরে বিভিন্ন পদে পুরোনো নেতৃত্বের জায়গায় কিছু নতুন মুখ আসতে পারে।
কলকাতাসহ রাজ্যের ১১০টি পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়েছে। করোনার জন্য নির্বাচন স্থগিত আছে।
এ ছাড়া কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন রয়েছে। তার মধ্যে মমতার নিজের কেন্দ্র ভবানীপুরও আছে, সেখান থেকে তিনি বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
এসব বিষয় সাংগঠনিক বৈঠকের আলাপে আসবে বলে সূত্রের খবর।
তবে তৃণমূলের সামনে এখন একটাই লক্ষ্য- ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের নেতৃত্ব দেয়া এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে মোদির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা। সে বিষয়েও কৌশল ঠিক করতে শনিবারের সাংগঠনিক বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।
মোদিকে মুখোমুখি লড়াইয়ে এরই মধ্যে গো-হারা হারিয়ে ভারতের বিজেপিবিরোধী দলগুলোর সমীহ আদায় করে নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
এমনকি রাজ্যের সদ্য শেষ হওয়া ভোট প্রচারে তিনি বলেছিলেন, বারানসীতে মোদির বিরুদ্ধে ভোট লড়ে মোদিকে পরাস্ত করতে চান।
দুর্বল কংগ্রেসের বদলে তৃণমূল নেত্রীকে সামনে রেখে দেশে মোদিবিরোধীদের এককাট্টা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এ সম্ভাবনার পক্ষে বিভিন্ন মাধ্যমে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরই মধ্যে বিজেপিবিরোধী নেটিজেনদের একাংশ মমতাকে ভারতের আগামী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরে প্রচার শুরু করেছে।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল ত্যাগ করা নেতাদের উদ্দেশে তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন, 'কেউ দলে ফিরতে চাইলে দল ভেবে দেখবে।'
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতে মুখিয়ে রয়েছেন বেশ কয়েকজন বিধায়ক।
ভোটের প্রচারে মমতা বলেছিলেন, 'মুকুলটার জন্য কষ্ট হচ্ছে। ও তো শুভেন্দুর মতো অত খারাপ নয়।’
বুধবার বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের অসুস্থ স্ত্রীকে তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে দেখতে গেলে তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠে।
পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে ২১ জুলাই তৃণমূলের বিজয় সমাবেশ মোদিবিরোধী মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে বলে সূত্রের খবর।