করোনাভাইরাস মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের যত্ন ও সুরক্ষার জন্য বিশেষ গাইডলাইন তৈরি করেছে ভারত সরকার। তাতে রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, জেলা শাসক, পুলিশ, পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলোর জন্য নির্দিষ্ট দায়িত্বের উল্লেখ রয়েছে।
গাইডলাইন-সম্পর্কিত নির্দেশিকায় রাজ্য সরকারকে অভিভাবকহীন শিশুদের সব তথ্যসহ একটি ডেটাবেজ তৈরি করতে বলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
করোনা সংক্রমণের কারণে যেসব শিশুর মা-বাবা মারা গেছে, তাদের দেখভালের জন্য গত ২৯ মে ‘পিএম কেয়ারস ফর চিলড্রেন’ নামের একটি প্রকল্পের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভারতের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব রামমোহন মিশ্র বলেন, ‘কোন কোন শিশু খারাপ অবস্থায় রয়েছে, তা জানতে জরিপ করতে হবে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোকে। সেসব তথ্য আপলোড করতে হবে ট্র্যাক চাইল্ড পোর্টালে।
‘চাইল্ড কেয়ার ইনস্টিটিউশন তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত ও অনাথ শিশুদের পাশে দাঁড়ানো হবে। তবে ওই সব শিশুর যাবতীয় তথ্য গোপন রাখতে হবে। প্রয়োজনে শিশুদের উপযুক্ত নিভৃতবাসেরও ব্যবস্থা করতে হবে। রাখতে হবে মনোবিদ। সুচারুভাবে এ কাজ করতে তৃণমূল স্তর থেকে সমন্বয়ে জোর দিতে হবে।’
কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত বা অনাথ শিশুদের পৈতৃক সম্পত্তি যাতে বেহাত বা পরিবারের অন্য কেউ বিক্রি করে না দিতে পারে, তাতে নজর দিতে হবে জেলা শাসককে।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অনাথ শিশুদের যত্ন ও সুরক্ষা জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট ২০১৫-এর আইনের আওতাধীন। ফলে এ ক্ষেত্রে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সরকারগুলোকে বাধ্যতামূলক প্রোটোকল অনুসরণ করতে হবে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন (এনসিপিসিআর) জানিয়েছে, মহামারিতে ৯ হাজার ৩৪৬ শিশু মা-বাবাকে হারিয়েছে।
হলফনামায় বলা হয়েছে, এদের মধ্যে ১ হাজার ৭৪২ শিশু বাবা ও মা দুজনকেই হারিয়েছে। ৭ হাজার ৪৬৪ শিশু বাবা অথবা মাকে হারিয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মে পর্যন্ত ১৪০টি শিশুকে তাদের বাবা–মা পরিত্যাগ করেছে।