বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যোগীর মন্দিরের কাছে মুসলমানদের উচ্ছেদের অভিযোগ

  •    
  • ৪ জুন, ২০২১ ১৭:১৮

উত্তর প্রদেশ কংগ্রেসের সংখ্যালঘু বিভাগের চেয়ারম্যান শাহনাওয়াজ আলম বলেন, ‘মন্দিরের পাশের বাসিন্দাদের কাছ থেকে স্থানীয় প্রশাসন জোর করে সম্মতিপত্রে সই নিয়েছে, তা নিয়ে খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়। কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বদলে রাজ্য সরকার উল্টো ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে (এনএসএ) সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিচ্ছে।’

ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের গোরাখপুর শহরের বাসিন্দা ৭১ বছর বয়সী জাভেদ আখতার। ছিলেন রেলের প্রকৌশলী। রাজ্যের নামকরা গোরাখনাথ মন্দির থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে ১০০ বছরের পুরোনো বাপ-দাদার ভিটায় থাকেন আখতার।

সম্প্রতি আখতারসহ আরও কয়েকটি মুসলমান পরিবারকে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদে স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে আখতার বলেন, পুলিশ ও গোরাখপুর জেলা কর্মকর্তারা সম্প্রতি তার বাড়িতে যান। তারা বাড়ির আশপাশের জমি পরিমাপ করেন।

পরদিন জেলা কর্মকর্তারা আখতারকে একটি ‘সম্মতিপত্রে’ সই করতে বলেন। এতে লেখা ছিল, গোরাখনাথ মন্দির প্রাঙ্গণের নিরাপত্তার স্বার্থে এর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পাশে বসবাসরত বাসিন্দারা তাদের জমি ও বাড়ি ভারত সরকারকে হস্তান্তরে সম্মতি জানিয়েছেন।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, মন্দিরে আশপাশের প্রায় ১২টি সংখ্যালঘু মুসলমান পরিবারকে সম্মতিপত্রে সই করতে বলা হয়।

স্বাক্ষরকারীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ তাদের বাড়িঘর খালি করতে বলেছে।

আখতার বলেন, কয়েকটি পরিবারকে তিনি এরই মধ্যে সম্মতিপত্রে সই করতে দেখেছেন।

তিনি বলেন, ‘কর্মকর্তারা আমাদের বলেছেন, সম্মতিপত্রে সই না করলে অন্য উপায়ে তারা আমাদের সই জোগাড় করে নেবেন। তাদের কথায় আমরা চাপ বোধ করি।’

একাদশ শতাব্দীর সন্ন্যাসী গুরু গোরাখনাথের নামে ৫২ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় গোরাখনাখ মন্দির।

গোরাখনাথ মন্দিরের বর্তমান মহান্ত বা প্রধান পুরোহিত উত্তর প্রদেশ রাজ্যের ডানপন্থি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

২০১৭ সালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপির প্রথম সারির নেতা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ সহযোগী যোগী। এর আগে প্রায় দুই দশক ধরে গোরাখপুরের সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আখতার বলেন, গোরাখপুরের স্থানীয় কর্মকর্তারা স্বাক্ষরকারীদের জানান, জমি ও সম্পত্তির জন্য তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো ক্ষতিপূরণ চাই না। আমরা এখানেই থাকতে চাই। কারণ আমাদের মা-বাবা, দাদা-দাদি এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই জায়গায় ছিলেন।’

আখতার বলেন, গোরাখপুরে বিজেপির ঘাঁটি শক্ত হলেও হিন্দু ও মুসলমানরা দীর্ঘদির ধরে এই অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতির মধ্যে বাস করে আসছে।

২৭ মে ঘরে ছিলেন না গোরাখপুর মন্দিরের কাছে বাস করা মুশির আহমেদ। ওই সময় স্থানীয় রাজস্ব বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা তার বাসায় যান। ওই কর্মকর্তারাও ৭০ বছর বয়সী আহমেদের বাড়ি মাপজোখ করেন। পরদিন তাকেও সম্মতিপত্রে সই করতে বলা হয়।

এদিকে মুসলমান পরিবারগুলোর কাছ থেকে জোর করে সই নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

গোরাখপুরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিজয়েন্দ্র পান্ডিয়ান বলেন, ‘এ অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা। জমি হস্তান্তর করবে কি করবে না, তা পুরোপুরি স্থানীয়দের ওপর নির্ভর করেছে।’

তিনি বলেন, ‘সম্মতি ছাড়া আমরা কারো জমি নিতে পারি না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব নথি পোস্ট করা হয়েছে, তা সবই মিথ্যা। আইটি অ্যাক্টের আওতায় আমরা এফআইআর করতে যাচ্ছি।’

তবে উত্তর প্রদেশ কংগ্রেসের সংখ্যালঘু বিভাগের চেয়ারম্যান শাহনাওয়াজ আলম বলেন, মন্দিরের পাশের বাসিন্দাদের কাছ থেকে স্থানীয় প্রশাসন জোর করে সম্মতিপত্রে সই নিয়েছে, তা নিয়ে খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়।’

তিনি বলেন, ‘কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বদলে রাজ্য সরকার উল্টো ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে (এনএসএ) সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর