ভারতে কোভিড-১৯ মহামারিতে মা-বাবা হারানো শিশুদের ত্রাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কল্যাণ প্রকল্পের বিস্তারিত জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
পাশাপাশি পর্যবেক্ষণের জন্য তৈরি করা ব্যবস্থাসহ পরিকল্পনার বিবরণও চাওয়া হয়েছে সরকারের কাছে। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোসের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে হলফনামা দিয়ে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন জানিয়েছে, মহামারিতে ৯ হাজার ৩৪৬ শিশু তাদের মা-বাবাকে হারিয়েছে।
কমিশনের হলফনামায় বলা হয়েছে, এদের মধ্যে ১ হাজার ৭৪২ শিশু তাদের মা-বাবা দুজনকেই হারিয়েছে। আর ৭ হাজার ৪৬৪ শিশু বাবা অথবা মাকে হারিয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মে পর্যন্ত ১৪০ শিশুকে তাদের মা-বাবা ত্যাগ করেছে।
এই অনাথ, গৃহহীন শিশুদের বয়স ১৭ বছরের মধ্যে। ৭৮৮ শিশুর বয়স ৩ বছরের কম। এরা সবচেয়ে বেশি দুর্বল। এদের যত্নের প্রয়োজন বলে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র। এই বয়সের শিশু সবচেয়ে বেশি রয়েছে উত্তর প্রদেশে। এ ছাড়া ৪–৭ বছরের শিশু রয়েছে ১ হাজান ৫১৫টি। ৮ থেকে ১৩ বছরের শিশু রয়েছে ৩ হাজার ৭১১টি। ১ হাজার ৬২০ শিশুর বয়স ১৪ থেকে ১৫ বছর। ১ হাজার ৭১২ শিশুর বয়স ১৬ থেকে ১৭ বছর।
কমিশন আরও জানিয়েছে, এই শিশুদের মধ্যে ১ হাজার ২২৪ জন অভিভাবকের কাছে থাকছে। ৩১ জনকে দত্তককেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। ৯৮৫ জনের কোনো আইনসংগত অভিভাবক নেই। তবে তারা পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে থাকছে।
আর ৬ হাজার ৬১২ জন রয়েছে মা অথবা বাবার কাছে। কমিশন জানিয়েছে, শিশুদের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে ‘বাল স্বরাজ’ নামে নতুন একটি পোর্টালে। ওই পোর্টালের মাধ্যমেই তাদের কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুযোগসুবিধা দেয়া হবে।
বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোসের বেঞ্চ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল যে তারা অনাথদের বিষয়ে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সচিব বা যুগ্ম সচিব স্তরের নোডাল অফিসার নিয়োগ করবে। নোডাল অফিসাররা সমস্ত তথ্য জানাবেন আদালতের অ্যামিকাস কিউরি গৌরব আগরওয়ালকে।
বেঞ্চ জানিয়েছে, সোমবার দশটি রাজ্য তেলঙ্গানা, তামিলনাড়ু, কেরালা, কর্ণাটক, গুজরাট, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের মামলার শুনানি হবে। এই রাজ্যগুলোতে বেশি শিশু তাদের উপার্জন ক্ষম অভিবাবককে হারিয়েছে।