ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বার্তা প্রকাশ্যে এনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় নতুন করে কলাইকুন্ডা বিতর্ক উসকে দিয়ে তৃণমূলের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত সপ্তাহে খড়গপুরের কলাইকুন্ডার ইয়াস-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পর্যালোচনা বৈঠক ডাকেন। এতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন না।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও বিজেপির নেতারা একের পর এক টুইট করে একে মুখ্যমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অসৌজন্য বলে অভিযোগ করেন।
পাশপাশি প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে হাজির না থাকার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে বদলির নির্দেশ দেয়া হয়।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বদলির নির্দেশ ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে চিঠি দিলেও এর কোনো জবাব আসেনি।
শেষ পর্যন্ত আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি পদ থেকে অবসর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন।
মমতা বলেন, ‘রাজ্যে ওর মতো দক্ষ প্রশাসকের প্রয়োজন। আর আলাপন মুখ্যসচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন। তাই আমরা ওকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে তিন মাস নয়, তিন বছরের জন্য রেখে দিলাম।’
‘বাংলা কখনো হারতে জানে না। বিজেপি হেরে গিয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।’
বিষয়টিকে কেন্দ্র ও বিজেপির কাছে জোর ধাক্কা বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার মাঝরাতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় মমতার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কথাবার্তা টুইট করে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত আরও বাড়িয়ে দিলেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রাজ্যপাল ধনকড় তার টুইটারে লিখেছেন, জরুরি ভিত্তিতে কথা বলতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তারপর দুজনের মধ্যে ফোনে কথা হয়।
সেই সময় মমতা তাকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কলাইকুন্ডা বৈঠকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থাকলে তিনি এবং প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ওই বৈঠকে থাকবেন না। বৈঠক বয়কট করবেন।
ধনকড় লেখেন, ‘সেই দিনের ঘটনার যে ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে জানিয়ে রাখতে চাই, ২৭ মে রাত ১১টা ১৬ মিনিটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে জরুরি ভিত্তিতে কথা বলার জন্য বার্তা পাঠান।’
টুইটে রাজ্যপাল ধনকড় লেখেন, ‘অহং জিতল, হেরে গেল নাগরিক পরিষেবা। কলাইকুন্ডার ঘটনা গণতন্ত্রের কালো দিন।’
এ ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
তৃণমূল সংসদ সদস্য সৌগত রায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘রাজ্যপালের মন্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন।’
‘মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক বয়কট করেননি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে রাজ্যের দাবি তুলে দিয়ে এসেছেন। শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আপত্তি জানাতেই পারেন। শুভেন্দু অধিকারী কোনো সরকারি কর্মকর্তা নন। কেন ওই বৈঠকে থাকবেন? মুখ্যমন্ত্রী ২৪ ঘণ্টা কাজ করেন। আর রাজ্যপাল টুইট করেন।’