পূর্ব জেরুজালেমের সিলওয়ান জেলার বাতান আল-হাওয়া এলাকা থেকে ফিলিস্তিনি কয়েকটি পরিবারকে উচ্ছেদসংক্রান্ত রায় চলতি সপ্তাহে ছিল। তবে উচ্ছেদ হতে যাওয়া ৪৪ ফিলিস্তিনির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা স্থগিত করে জেরুজালেমের জেলা আদালত।
ফিলিস্তিনিদের ভাষ্য, উচ্ছেদের মাধ্যমে পূর্ব জেরুজালেমকে পুরোপুরি ইহুদিকরণ করা হবে এবং খুব অল্প সময়েই তা হবে।
ডিফেন্স অফ সিলওয়ানস ল্যান্ডস অ্যান্ড রিয়েল এস্টেট কমিটির প্রধান ও জেরুজালেমবিষয়ক গবেষক ফাখরি আবু দিয়াব আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আদালত রায় স্থগিত করেছে। কারণ শেখ জারাহ এলাকায়ও ফিলিস্তিনিরা উচ্ছেদের মুখে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আসেন। সব মিলিয়ে ফিলিস্তিনিদের ঘরহারা করার উপযুক্ত সময় এখন নয়।
‘অবশ্য ভবিষ্যতে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের (সেটেলার) পক্ষে রায় দেবে ইসরায়েলের আদালত। এ অঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়ন চলতে থাকবে।’
মাসখানেক ধরে পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকায় বসবাসরত বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারের উচ্ছেদকে ঘিরে উত্তেজনা চলছে। একপর্যায়ে মুসলমানদের পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদেও হামলা চালায় ইসরায়েলের পুলিশ। আহত হয় পাঁচ শতাধিক ফিলিস্তিনি। গ্রেপ্তার হন অনেকে।
এমন বাস্তবতায় ১০ মে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। টানা ১১ দিন ধরে চলা ওই সংঘাতে গাজা ভূখণ্ডে ৬৬ শিশুসহ ২৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। অন্যদিকে হামাসের রকেট হামলায় নিহত হয় দুই শিশুসহ ১২ ইসরায়েলি।
১৯৯১ সালের মাদ্রিদ সম্মেলন শান্তি আলোচনায় ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) প্রতিনিধি প্রয়াত ফয়সাল হুসেইনির ভাতিজা ওয়ালিদ হুসেইনি বলেন, ‘বিতাড়ন কর্মকাণ্ড ফের শুরু হলে এবার ফিলিস্তিনিরা আত্মসমর্পণ করবে না।’
তিনি বলেন, ‘এবারের পরিস্থিতি প্রথম ইন্তিফাদার (১৯৮৭ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের দখলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের বিদ্রোহ) মতো। ফিলিস্তিনিরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি রাজনীতি বোঝে। তারা আর ভীত নয়।’
ওয়ালিদ হুসেইনি বলেন, ‘অক্ষম ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএনএ) ওপর তারা (ফিলিস্তিনি) ভরসা রেখেছিল। তার আগে দুর্নীতিগ্রস্ত পিএলও নেতৃত্বের কাছে নিজেদের সমর্পণ করে তারা।
‘তবে তারা এখন বুঝতে পেরেছে, তাদের নিজেদেরই সমস্যার সমাধান করতে হবে। কারণ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ বিষয়ে ইসরায়েলকে কোনো ধরনের চাপ দেবে না।’