ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নারদাকাণ্ডে গ্রেপ্তার চার নেতাকে গৃহবন্দি করে রাখার নির্দেশ দিলে এই রায়ের বিরোধিতা করে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে যায়। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের অবসরকালীন বেঞ্চের দুই বিচারপতি বিনীত শর্মা ও বি আর গাভাইয়ের প্রশ্নের মুখে পড়ে সেই মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সিবিআই।
ফলে কলকাতা হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চেই চলবে এই মামলা। চার নেতার জামিনের সিদ্ধান্তের ভারও থাকল কলকাতা হাই কোর্টের হাতে ।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিনীত শর্মা ও বি আর গাভাইয়ের অবসরকালীন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শুরু হলে সিবিআই আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা চার নেতার জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই অফিসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি এবং নিম্ন আদালতে আইনজীবী মলয় ঘটকের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিচারে চাপ সৃষ্টি করার কথা বলেন।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির পাল্টা প্রশ্ন- ‘সিবিআই অফিসে মুখ্যমন্ত্রী বা নিম্ন আদালতে আইনমন্ত্রীর উপস্থিতির জন্য অভিযুক্তরা কেন জামিনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন? কলকাতা হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে যেখানে শুনানি হচ্ছে, সেখানে শীর্ষ আদালতে আপনাদের আসতে হলো কেন? হাই কোর্টের ওপর কি আস্থা নেই সিবিআইয়ের?’
সুপ্রিম কোর্টের অবসরকালীন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে বলে, ‘আপনারা চাইলে আমরা শুনানি শেষ করে রায় দিয়ে দেব। না হলে আপনারা মামলা প্রত্যাহার করে নিতে পারেন।’
এর পরেই সিবিআইয়ের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা বলেন, ‘কলকাতা হাই কোর্ট থেকে মামলা শুধু সরানো নয়, তারা চাইছে অন্য আদালতে নিয়ে যেতে।’
এ কথায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির উত্তর, ‘অভিযুক্তদের জামিন দেয়ার পরই শুনানি হতে পারে। আপনারা মামলা প্রত্যাহার করুন।’
বিশেষজ্ঞ আইনজীবীদের মতে, সুপ্রিম কোর্টে আজকের বিচারপতিদের যা মনোভাব ছিল, তাতে মামলার রায় সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই তারা মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।
তৃণমূল কংগ্রেসের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইকে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছে তার সদুত্তর দিতে পারেনি তারা।’
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে কলকাতা হাই কোর্ট ২৬ ও ২৭ মে আদালতের সব কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বন্ধ থাকবে নারদাকাণ্ডের বুধবারের জামিন শুনানিও।
কবে আবার কলকাতা হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে নারদাকাণ্ডের জামিন শুনানি হবে, তাও নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। ফলে আপাতত গ্রেপ্তার চার নেতাকে গৃহবন্দি থাকতে হচ্ছে।