ক্রমাগত সংকট ও ঝুঁকির মুখে থাকা পৃথিবীকে রক্ষা করতে হলে প্রচলিত কৃষিকাজ ও খাদ্য গ্রহণে পরিবর্তন আনা জরুরি বলে মনে করেন জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। এ নিয়ে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি এসব বার্তা দেন বলে এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
১৮ বছর বয়সী গ্রেটা বলেন, ‘জলবায়ু সংকট, বাস্তুসংস্থানসংক্রান্ত সংকট ও স্বাস্থ্য সংকট একসূত্রে গাঁথা। করোনাভাইরাস, জিকা, ইবোলা, ওয়েস্ট নাইল ফিবার, সার্স, মার্স, এইডসে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কৃষিকাজের ধরন ও নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলার মাধ্যমে রোগ সংক্রমণের উপযুক্ত পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করছি। প্রকৃতির ওপর আমাদের অত্যাচারের ফলে রোগ এখন প্রাণী থেকে প্রাণীতে ছড়াচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, প্রাণী থেকে রোগ মানবদেহেও সংক্রমিত হচ্ছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞ দল সম্প্রতি জানিয়েছে, প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে করোনা প্রবেশ করার সম্ভাবনা বেশি।
এ ছাড়া অতি সংক্রামক জুনোসিস রোগও প্রাণী থেকে মানবদেহে সংক্রমিত হয়।
থুনবার্গ বলেন, ‘আমরা যে পদ্ধতিতে খাদ্য উৎপাদন করি, এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই অনেক বন্য প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংস করে ফেলব। অগণিত প্রজাতি বিলুপ্তির পথে হাঁটবে।
‘বন্য উদ্ভিদ ও প্রাণী আমাদের জীবন রক্ষাকারী উপাদান। তারা হারিয়ে গেলে আমরাও বাঁচব না।’
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কার্বন নিঃসরণ কমাতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে সুইডিশ এই জলবায়ুকর্মী বলেন, ‘জলবায়ু সংকট সৃষ্টির খলনায়ক কারা, তা চিন্তা করলে অবশ্যই আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানের দিকেই আঙুল তুলব।
‘তবে প্রচলিত কৃষিকাজ ও জমির ব্যবহার উভয়ই কার্বন নিঃসরণের জন্য প্রায় এক-চতুর্থাংশ দায়ী। এ হার অনেক বেশি।’
তিনি বলেন, ‘এমনটা না করলেও চলবে। আমরা যদি উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্যের দিকে নজর দিই, তাহলে প্রতিবছর আট বিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ঠেকাতে পারব।’