ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতিতে পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ চত্বরে হামলা চালিয়েছেন বেশ কয়েকজন ইহুদি বসতি স্থাপনকারী ।
রোববার সকালে ওই হামলা হয় বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে মসজিদ প্রাঙ্গণে থাকা ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের উপর হামলা চালায় ইসরায়েলের পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে ফিলিস্তিনের বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, রোববার ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে আল-আকসা মসজিদে উপস্থিত হন ফিলিস্তিনিরা। ইহুদি দর্শনার্থীদের চলাচলের পথ করে দিতে সে সময় মুসল্লিদের বেধড়ক পেটায় ইসরায়েলি পুলিশ।
ওয়াফার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওই সময় কম পক্ষে ছয় ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে আল-আকসা মসজিদের প্রহরী ফাদি আয়লান, ইসলামিক ওয়াকফ কাউন্সিলের কর্মচারী আলি ওয়াজুজও রয়েছেন।
হামলা ও গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আল-আকসা মসজিদে প্রবেশে বিধিনিষেধ বাড়িয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। ৪৫ বছরের কম বয়সী ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের মসজিদে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
আল-আকসা মসজিদে কড়াকড়ি আরোপ করেছে ইসরায়েলের পুলিশ। ছবি: এএফপি
আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র স্থান। তবে এটি ইহুদিদেরও পবিত্র স্থান, যাকে তারা টেম্পল মাউন্ট হিসেবে জানে।
ইসরায়েল অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের দামেস্ক গেট থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হোদা আবদেল-হামিদ বলেন, ‘আল-আকসায় হামলা চালানো দর্শনার্থীরা ইহুদি বসতি স্থাপনকারী বা ইসরায়েলের নাগরিক।
‘এমন সময় ঘটনাটি হয় যখন পুরো অঞ্চলে বেশ কিছুদিন ধরে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় ওই দর্শনার্থীরা আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন।’
পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জাররাহ এলাকা থেকে ফিলিস্তিনি কয়েকটি পরিবারকে উচ্ছেদে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের পক্ষে রায় দেয় ইসরায়েলের হাইকোর্ট।
এ নিয়ে পবিত্র রমজান মাসজুড়ে ওই অঞ্চলে চলে ব্যাপক উত্তেজনা। ৭ মে রাতে আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী হানা দিলে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়।
১০ মে ভোরে ফজরের নামাজের সময় জেরুজালেম দিবস উপলক্ষে ইসরায়েলিদের শোভাযাত্রা শুরুর আগে আল-আকসা মসজিদে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট নিয়ে অতর্কিতে নিরস্ত্র মুসল্লিদের ওপর হামলে পড়ে জায়নবাদী রাষ্ট্রটি। চার দিনের সংঘর্ষে আহত হয় পাঁচ শর বেশি ফিলিস্তিনি।
১০ মে রাত থেকে ইসরায়েল ও হামাস পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু করে।
টানা ১১ দিনের সংঘর্ষে ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয় ৬৫ শিশুসহ ২৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয় প্রায় দুই হাজার মানুষ। ঘরবাড়ি হারিয়েছে এক লাখের বেশি ফিলিস্তিনি।
১১ দিনের সংঘর্ষ শেষে বৃহস্পতিবার রাতে মিসরের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।