বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডায়ানার ক্ষতি করতে চাইনি: বশির

  •    
  • ২৩ মে, ২০২১ ১৬:৫৭

মার্টিন বশির বলেন, ‘ডায়ানা যেভাবে চেয়েছিলেন সেভাবেই সাক্ষাৎকারটি সাজানো হয়। রাজপরিবারকে কবে নাগাদ সতর্ক করা জরুরি, কবে ওই সাক্ষাৎকার সম্প্রচার হবে, সাক্ষাৎকারের বিষয়বস্তু কী হবে, সবই তার ইচ্ছা অনুযায়ীই হয়।’

প্রিন্সেস ডায়ানার সাক্ষাৎকার নেয়ার মধ্য দিয়ে তার ক্ষতি করার উদ্দেশ্য ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন বিবিসির আলোচিত সাবেক সাংবাদিক মার্টিন বশির।

দ্য সানডে টাইমস পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে রোববার জানিয়েছে বিবিসি

১৯৯৫ সালে প্রিন্সেস ডায়ানার সাক্ষাৎকার নিতে বিবিসির তৎকালীন সাংবাদিক বশির প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে বৃহস্পতিবার এক তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে।

যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী সংবাদমাধ্যমটিকে নিয়ে এরপরই শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। একপর্যায়ে শনিবার পদত্যাগে বাধ্য হন বিবিসির সে সময়কার ডিরেক্টর অফ নিউজ লর্ড হল।

ডায়ানার সাক্ষাৎকার ঘিরে চলমান আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বশিরের সাক্ষাৎকার নেয় সানডে টাইমস।

তিনি সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, যা হয়েছে তার জন্য প্রয়াত ডায়ানার দুই ছেলের কাছে ‘গভীরভাবে দুঃখিত’ তিনি।

ডায়ানার মানসিক অস্থিরতা বাড়াতে বশির ভূমিকা রেখেছেন বলে প্রিন্সেসের বড় ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম অভিযোগ করেছেন। তবে বশির সেটি খারিজ করেছেন।

বশির বলেন, ডায়ানার সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল।

সানডে টাইমসকে বশির বলেন, ১৯৯০ সালের শুরুর দিকেও ব্রিটিশ রাজপরিবার ঘিরে অনেক কানাঘুষা ছিল। সে সময় গোপনে ফোন রেকর্ডও হয়। কিন্তু এসবের কোনো কিছুরই সোর্স ছিলেন না তিনি।

বশির বলেন, সাক্ষাৎকারের বিষয়বস্তু নিয়ে ডায়ানা কখনোই অসন্তুষ্ট ছিলেন না। সাক্ষাৎকার সম্প্রচার শেষেও তাদের বন্ধুত্ব অটুট ছিল।

তিনি বলেন, ‘ডায়ানা যেভাবে চেয়েছিলেন, সেভাবেই সাক্ষাৎকারটি সাজানো হয়। রাজপরিবারকে কবে নাগাদ সতর্ক করা জরুরি, কবে ওই সাক্ষাৎকার সম্প্রচার হবে, সাক্ষাৎকারের বিষয়বস্তু কী হবে, সবই তার ইচ্ছা অনুযায়ীই হয়।’

ডায়ানার ভাই আর্ল স্পেনসারকে ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখানোর বিষয়ে বিবিসির সাবেক এ সাংবাদিক বলেন, ‘অবশ্যই আমি এ জন্য অনুতপ্ত। এটি ঠিক হয়নি।

‘তবে এর সঙ্গে ডায়ানা সাক্ষাৎকারে যা বলেছেন, তার কোনো যোগসূত্র নেই।’

১৯৯৫ সালে মার্টিন বশিরের মুখোমুখি হন প্রিন্সেস ডায়ানা। ছবি: এএফপি

এদিকে বশিরের সাক্ষাৎকার নেয়ার পর নিজের মতামত জানান সানডে টাইমসের সাংবাদিক রোজামুন্ড উরউইন।

বিবিসি রেডিও ৫ লাইভে তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে একজন মানুষের যতটা অনুতপ্ত হওয়া উচিত ছিল, বশিরকে দেখে আমার তা মনে হয়নি। অপরাধ স্বীকারের পরিবর্তে কেউ যখন নিজের সাফাই গাইতে অজুহাত খোঁজেন, তখন আমার কাছে বিষয়টি সমস্যাজনক মনে হয়।’

ডায়ানার সাক্ষাৎকার নিয়ে বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারক লর্ড ডাইসন তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

এতে বলা হয়, ১৯৯৫ সালে প্রিন্সেস ডায়ানার সাক্ষাৎকার নিতে প্রযোজনা নীতিমালা ‘ভয়াবহ লঙ্ঘন’ করেন বিবিসির সাংবাদিক মার্টিন বশির। ওই সময় ‘প্রতারণামূলক আচরণের’ পাশাপাশি ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্টও ব্যবহার করেন তিনি।

ঘটনাটির সময় বিবিসির ডিরেক্টর অফ নিউজ ছিলেন লর্ড হল।

২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে ন্যাশনাল গ্যালারির ট্রাস্টি ছিলেন লর্ড হল। পরে গত বছরের জুলাই মাসে বোর্ডের চেয়ারম্যান হন তিনি।

ডায়ানার সাক্ষাৎকার নিয়ে বিচারক ডাইসনের তদন্ত প্রতিবেদনের পর বিবিসির কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করা যুক্তরাজ্যের হাউস অফ কমন্সের ডিজিটাল কালচার, মিডিয়া ও স্পোর্ট সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান জুলিয়ান নাইটের প্রশ্ন ছিল, ২০১৬ সালে বিবিসিতে বশিরকে ফের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল কেন।

সে সময় বিবিসির মহাপরিচালক ছিলেন লর্ড হল।

১৯৯৫ সালে বিবিসির এক অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকারে হাজির হন ডায়ানা। সাক্ষাৎকারটি নেন মার্টিন বশির। তবে সাক্ষাৎকারটি নেয়ার ক্ষেত্রে সততা ও স্বচ্ছতার বিষয়ে বিবিসির যে মানদণ্ড রয়েছে, তা মানা হয়নি।

বিবিসির মহাপরিচালক টিম ড্যাভি বলেন, ডায়ানার ওই সাক্ষাৎকার ঘিরে লর্ড ডাইসনের তদন্তে যেসব তথ্য উঠে এসেছে, তা পুরোপুরি মেনে নিচ্ছে বিবিসি।

গত বছরের নভেম্বরে ডায়ানার বহুল আলোচিত ওই সাক্ষাৎকার নিয়ে তদন্ত করতে ব্রিটেনের অবসরপ্রাপ্ত সর্বজ্যেষ্ঠ বিচারক ও সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারক লর্ড ডাইসনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিবিসি।

বৃহস্পতিবার বিবিসির মহাপরিচালক ড্যাভি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘লর্ড ডাইসনকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। ১৯৯৫ সালের সাক্ষাৎকার ঘিরে তার তদন্ত প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত। বিবিসি তার প্রতিবেদনের পুরোটাই গ্রহণ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রিন্সেস অফ ওয়েলস ডায়ানা বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেয়ার বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন। তবে এটি পরিষ্কার, সাক্ষাৎকারটি নিতে যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা বিবিসির মানদণ্ড অনুযায়ী ছিল না। এ জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। লর্ড ডাইসন আমাদের ব্যর্থতাগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পেরেছেন।’

বিবৃতিতে ড্যাভি আরও বলেন, ‘সাক্ষাৎকার গ্রহণে বিবিসির পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া এখন অনেক উন্নত। ডায়ানার সাক্ষাৎকারটি নিতে যে প্রক্রিয়া ওই সময় অবলম্বন করা হয়েছিল, তা পরিহার করা যেত।

‘সাক্ষাৎকারটি নেয়ার সময় কী কী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা জানার চেষ্টা করা উচিত ছিল বিবিসির।’

তিনি বলেন, ‘বিবিসির পক্ষে ২৫ বছর আগের সময়ে ফিরে যাওয়া সম্ভব না। পুরো ঘটনার জন্য আমরা এখন নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি।’

ডায়ানার সাক্ষাৎকার সাংবাদিক বশিরকে রীতিমতো জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেয়।

ওই সাক্ষাৎকার নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক দিন আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিবিসি থেকে পদত্যাগ করেন বশির।

এ বিভাগের আরো খবর