বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডায়ানার সাক্ষাৎকার: পদত্যাগ করলেন বিবিসির সাবেক মহাপরিচালক

  •    
  • ২২ মে, ২০২১ ১৯:৫৪

লর্ড হল শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘২৫ বছর আগের ঘটনাটির জন্য আমি খুবই দুঃখিত। আমি মনে করি, নেতৃত্ব মানেই দায়িত্ব কাঁধে নেয়া।’

প্রিন্সেস ডায়ানার সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল গ্যালারির চেয়ারম্যান লর্ড হল। তিনি বিবিসির সাবেক মহাপরিচালক ছিলেন। শনিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

ডায়ানার সাক্ষাৎকার নিয়ে বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারক লর্ড ডাইসন তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

এতে বলা হয়, ১৯৯৫ সালে প্রিন্সেস ডায়ানার সাক্ষাৎকার নিতে প্রযোজনা নীতিমালা ‘ভয়াবহ লঙ্ঘন’ করেন বিবিসির সাংবাদিক মার্টিন বশির। ওই সময় ‘প্রতারণামূলক আচরণের’ পাশাপাশি ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্টও ব্যবহার করেন তিনি।

ঘটনাটির সময় বিবিসির ডিরেক্টর অফ নিউজ ছিলেন লর্ড হল।

লর্ড হল শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ন্যাশনাল গ্যালারির চেয়ারম্যান পদে থাকলে অসন্তোষ দেখা দিতে পারে।

তিনি বলেন, ‘২৫ বছর আগের ঘটনাটির জন্য আমি খুবই দুঃখিত। আমি মনে করি, নেতৃত্ব মানেই দায়িত্ব কাঁধে নেয়া।’

২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে ন্যাশনাল গ্যালারির ট্রাস্টি ছিলেন লর্ড হল। পরে গত বছরের জুলাই মাসে বোর্ডের চেয়ারম্যান হন তিনি।

ডায়ানার সাক্ষাৎকার নিয়ে বিচারক ডাইসনের তদন্ত প্রতিবেদনের পর বিবিসির কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করা যুক্তরাজ্যের হাউস অফ কমন্সের ডিজিটাল কালচার, মিডিয়া ও স্পোর্ট সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান জুলিয়ান নাইট প্রশ্ন তোলেন, ২০১৬ সালে বিবিসিতে বশিরকে ফের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল কেন।

সে সময় বিবিসির মহাপরিচালক ছিলেন লর্ড হল।

ন্যাশনাল গ্যালারিতে থাকাকালে বিভিন্ন কাজের জন্য লর্ড হলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সংস্থাটির পরিচালক ড. গ্যাব্রিয়েল ফিনাল্ডি।

এ ছাড়া ন্যাশনাল গ্যালারির বোর্ড অফ ট্রাস্টির ডেপুটি চেয়ারম্যান স্যার জন কিংম্যান বলেন, ‘লর্ড হলকে হারিয়ে গ্যালারির কর্মকর্তারা খুবই দুঃখিত।’

১৯৯৫ সালে বিবিসির এক অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকারে হাজির হন ডায়ানা। সাক্ষাৎকারটি নেন মার্টিন বশির। তবে সাক্ষাৎকারটি নেয়ার ক্ষেত্রে সততা ও স্বচ্ছতার বিষয়ে বিবিসির যে মানদণ্ড রয়েছে, তা মানা হয়নি।

বিবিসির মহাপরিচালক টিম ড্যাভি বলেন, ডায়ানার ওই সাক্ষাৎকার ঘিরে লর্ড ডাইসনের তদন্তে যেসব তথ্য উঠে এসেছে, তা পুরোপুরি মেনে নিচ্ছে বিবিসি।

গত বছরের নভেম্বরে ডায়ানার বহুল আলোচিত ওই সাক্ষাৎকার নিয়ে তদন্ত করতে ব্রিটেনের অবসরপ্রাপ্ত সর্বজ্যেষ্ঠ বিচারক ও সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারক লর্ড ডাইসনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিবিসি।

বৃহস্পতিবার বিবিসির মহাপরিচালক ড্যাভি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘লর্ড ডাইসনকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। ১৯৯৫ সালের সাক্ষাৎকার ঘিরে তার তদন্ত প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত। বিবিসি তার প্রতিবেদনের পুরোটাই গ্রহণ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রিন্সেস অফ ওয়েলস ডায়ানা বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেয়ার বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন। তবে এটি পরিষ্কার, সাক্ষাৎকারটি নিতে যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা বিবিসির মানদণ্ড অনুযায়ী ছিল না। এ জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। লর্ড ডাইসন আমাদের ব্যর্থতাগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পেরেছেন।’

বিবৃতিতে ড্যাভি আরও বলেন, ‘সাক্ষাৎকার গ্রহণে বিবিসির পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া এখন অনেক উন্নত। ডায়ানার সাক্ষাৎকারটি নিতে যে প্রক্রিয়া ওই সময় অবলম্বন করা হয়েছিল, তা পরিহার করা যেত। সাক্ষাৎকারটি নেয়ার সময় কী কী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা জানার চেষ্টা করা উচিত ছিল বিবিসির।’

তিনি বলেন, ‘বিবিসির পক্ষে ২৫ বছর আগের সময়ে ফিরে যাওয়া সম্ভব না। পুরো ঘটনার জন্য আমরা এখন নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি।’

ডায়ানার সাক্ষাৎকার সাংবাদিক বশিরকে রীতিমতো জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেয়। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক দিন আগে চলতি মাসে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিবিসি থেকে পদত্যাগ করেন বশির।

বিবিসির সাংবাদিক মার্টিন বশির। ছবি: এএফপি

বিশ্বজুড়ে ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ডায়ানার সেই সাক্ষাৎকার দেখেছিল। সেখানে নিজের জীবন ও বিয়ে নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন ডায়ানা।

সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ রাজপরিবার নিয়ে ডায়ানা এমন অনেক বিষয় জানান, যা নিয়ে এর আগে কখনো মুখ খোলেননি তিনি। ডাচেস অফ কর্নওয়েল ক্যামিলাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছিলেন, প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে তার বিয়েতে দুজন নয়, তিন ব্যক্তি ছিলেন।

এর আগে বিবিসির সাংবাদিক মার্টিন বশির জাল ব্যাংক স্টেটমেন্ট ব্যবহার করে সাক্ষাৎকার দিতে ডায়ানাকে রাজি করান বলে অভিযোগ তোলেন ডায়ানার ভাই আর্ল স্পেনসার।

গত বছরের নভেম্বরের শুরুতে আর্ল স্পেনসার প্রিন্সেসের সাক্ষাৎকার নিতে ‘চরম অসততা’ করা হয়েছে, এমন অভিযোগ এনে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান।

বিবিসির মহাপরিচালক টিম ড্যাভিকে পাঠানো চিঠিতে আর্ল বলেছিলেন, মার্টিন বশির জাল ব্যাংক স্টেটমেন্ট ব্যবহার করেন, যেখানে ভুলভাবে দেখানো হয়, ডায়ানা সম্পর্কে তথ্য নিতে রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ দুই সদস্যকে নিরাপত্তা বাহিনী টাকা দেয়।

১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট প্যারিসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ডায়ানা।

এ বিভাগের আরো খবর