গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দিন চলছে। এর আগে যা হওয়ার হয়েছে। তেল আবিবের টানা ১১ দিনের বোমাবর্ষণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের বসতবাড়ি।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কমপক্ষে ১০ কোটি ডলারের প্রয়োজন।
গাজায় ইসরাইলের নতুন এই আগ্রাসন শুরু থেকে কাভার করে আসছেন আল জাজিরার প্রতিবেদক হ্যারি ফোকেট।
শনিবার ইসরাইলি বোমায় বিধ্বস্ত একটি ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে বর্ণনা করছিলেন গত ১১ দিনের অভিজ্ঞতা।
‘অন্য সময় গাজার দিনে বিদ্যুৎ থাকতো ১২ ঘণ্টা। কিন্তু এই কয়েকদিনের ধ্বংসযজ্ঞে এখন বিদ্যুৎ থাকছে দিনে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।
‘গাজায় মোট ১৩টি হাসপাতাল রয়েছে। সেগুলোতে এখন উপচেপড়া ভিড়। জ্বালানি সংকটের কারণে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ’
এদিকে, সীমান্ত খুলে দেয়ায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ বহর ঢুকতে শুরু করেছে গাজায়। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গে কারিম আল সালিম সীমান্ত খুলে দেয় তেল আবিব। এসব ত্রাণ বহরের মধ্যে আছে জরুরি ওষুধ, খাবার ও জ্বালানি।
জাতিসংঘ বলছে, এ পর্যন্ত ১ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের জরুরি ত্রাণ গাজায় পাঠানো হয়েছে।
আল জাজিরার হ্যারি ফোকেট বলেন, কিছু ত্রাণ আসা শুরু হয়েছে। তবে সামনের দিনগুলোতে চিকিৎসক, হাসপাতাল ও দাতব্য সংস্থাগুলোকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেশ বেগ পেতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মারগারেট হ্যারিস বলেন, ইসরাইলি হামলায় হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে। তাদের চিকিৎসায় দ্রুত চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানো প্রয়োজন। আর এর জন্য আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ আবশ্যক।
গাজা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেড ক্রস। সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক ফেব্রিজিও কারবনিও গাজায় দ্রুত চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোর ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলছেন, গাজায় যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে উঠতে কয়েক বছর সময় লাগবে। আর মানুষের মন থেকে ভয়াবহ স্মৃতি ভুলতে লাগবে আরও সময়।
ধংস্তুপের নিচ থেকে শুক্রবার আরও পাঁচ ফিলিস্তিনির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে ইসরাইলি হামলায় ৬৬ শিশুসহ কমপক্ষে ২৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, তেল আবিবের দাবি, হামাসের হামলায় এক সেনাসহ ১২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে দুই জন শিশু রয়েছে।