ফিলিস্তিনে বিমান হামলা চালিয়ে নির্বিচারে বেসামরিক হত্যাযজ্ঞ চালানোর পরও ইসরায়েলকেই সমর্থন দিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
হোয়াইট হাউজে স্থানীয় সময় শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির ইসরায়েলবিষয়ক নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে কি না, তা বাইডেনের কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমার দল ইসরায়েলকেই সমর্থন করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রশ্নে আমার অবস্থানে কোনো পরিবর্তন হবে না, এটা চূড়ান্ত; বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হবে না।
‘তবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের দ্বিপক্ষীয় সমাধান আমরা চাই, এটাও সত্য। এটাই এ প্রশ্নের একমাত্র উত্তর।’
এর আগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গাজার শাসক দল হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে অস্ত্রবিরতি কার্যকর হওয়ার পর তা রক্ষায় কাজ করার আশ্বাস দেন বাইডেন। ইসরায়েলের মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট একই সঙ্গে সহিংসতায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা পুনর্নির্মাণ ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিতে সহযোগিতারও ঘোষণা দেন।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী আগ্রাসনের মধ্যেই চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের কাছে সাড়ে ৭৩ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, উদারপন্থি কয়েকজন আইনপ্রণেতা ও ডেমোক্র্যাট নেতারা অস্ত্র চুক্তিটি স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছিলেন বাইডেনকে।
এ বিষয়ে বাইডেন বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সাম্প্রতিক চুক্তি তারই প্রতিফলন। তবে ফিলিস্তিনিদের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও কাজ করব আমরা। এ জন্য জেরুজালেমে জাতিগত সহিংসতা বন্ধে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছি আমি।’
১০ মে থেকে ফিলিস্তিনে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৬৫ শিশুসহ ২৫০ ফিলিস্তিনির প্রাণহানির পর এসব কথা বলেন বাইডেন।
১১ দিনের সহিংসতায় আহত হয়েছে দুই হাজার ফিলিস্তিনি। ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়েছেন এক লাখ।
এমন পরিস্থিতিতে গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ করেছে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বেশ কিছু প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক সংস্থা।
তাদের অভিযোগ, ইচ্ছা করে নারী-শিশুসহ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের হত্যা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে হামলা আর অবৈধভাবে অন্যের বসতি দখল করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। এর ওপর ফিলিস্তিনিদের ন্যূনতম মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করার অনেক পুরোনো অভিযোগ তো আছেই।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের আনুষ্ঠানিক তদন্তও শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। তদন্তে কোনো ধরনের সহযোগিতা করা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল।