ইসরায়েলের কাছে সাড়ে ৭৩ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী আগ্রাসনের মধ্যেই এলো এ পদক্ষেপ।
সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ৫ মে বাণিজ্যিক এ চুক্তির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয় কংগ্রেসকে।
চুক্তিতে কোনো ধরনের বাধা দেননি ডেমোক্র্যাটিক বা রিপাবলিকান পার্টির কোনো আইনপ্রণেতাই।
কংগ্রেস সূত্রের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নিয়মিত বাণিজ্যের অংশ হিসেবেই অস্ত্র বিক্রির এ চুক্তি হয়েছিল। চুক্তিটি যখন হয়, তখনও গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের এ আগ্রাসন শুরু হয়নি।
গাজার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানালেও সহিংসতা চালানো মিত্র ইসরায়েলকে অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত ১০ মে থেকে গাজা উপত্যকাসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত উপত্যকায় ২১২ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬১ শিশু রয়েছে।
ইসরায়েলি আগ্রাসনে বেসামরিক প্রাণহানির মধ্যেই দেশটির কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির এ পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
বিবৃতিতে সংস্থাটি লিখেছে, এ পদক্ষেপের পর বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সমুন্নত রাখার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করল যুক্তরাষ্ট্র।
অ্যামনেস্টির মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর ফিলিপ নাসির এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধে ব্যবহার হতে পারে, এমন অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে বেসামরিক হত্যাযজ্ঞ আরও উসকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির অস্ত্রে আরও অনেক নিরস্ত্র মানুষের মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে।’
এর আগে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের যৌথ বিবৃতি ভেটো দিয়ে আটকে দেয় মিত্র রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র।
সুইডেনভিত্তিক সংস্থা স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপ্রি) তথ্য অনুযায়ী, অস্ত্র রপ্তানিতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ দেশ যুক্তরাষ্ট্র। অস্ত্রের সপ্তম বৃহৎ ক্রেতা দেশ ইসরায়েল।
২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ইসরায়েল ২২৪ কোটি ডলারের অস্ত্র কিনেছে।