ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নবম দিনে গড়াল ইসরায়েলের সামরিক অভিযান। ১০ মে থেকে শুরু হওয়া হামলায় প্রাণ গেছে কমপক্ষে ২১২ জন ফিলিস্তিনির, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক। এদের মধ্যে ৬১ জনই শিশু। আহত হয়েছে দেড় হাজারের বেশি মানুষ।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার ভোরেও ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ছোড়া বোমা বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখা যায় ফিলিস্তিনের আকাশের। রাতভর কমপক্ষে ৩০ দফা বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ফিলিস্তিন থেকেও দফায় দফায় রকেট হামলা হয়েছে ইসরায়েলে।
গত এক সপ্তাহে গাজার শাসক দল হামাসসহ বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনের ছোড়া রকেটে দুই শিশুসহ ১০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলের দাবি, গাজা উপত্যকায় নিহতদের ১৩০ জনই হামাসের যোদ্ধা। বেসামরিক প্রাণহানি হলেও তা অনিচ্ছাকৃত।
তবে ইসরায়েলের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস।
অবরোধে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত ২০ লাখ বাসিন্দার গাজা উপত্যকা নতুন করে সহিংসতার মুখে পড়েছে। গত কয়েক দিনে অঞ্চলটিতে বোমা মেরে ৪০টি স্কুল ও চারটি হাসপাতাল ভবন আংশিক বা পুরোপুরি ধসিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। জ্বালানি সংকটে অঞ্চলটির মৌলিক সেবাও বন্ধের পথে।
মুসলমান ও ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র ভূমি খ্যাত অবরুদ্ধ পূর্ব জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে সংঘর্ষের ঘটনাকে ঘিরে কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলছিল উত্তেজনা। এর জেরেই শুরু হয় সহিংসতা।
আল আকসা থেকে সরে যাওয়ার জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে ইসরায়েলে রকেট ছোড়ে হামাস। পাল্টা জবাবে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
যতক্ষণ প্রয়োজন, পূর্ণ শক্তিতে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে কথোপকথনে সোমবার দেশটির ‘উসকানিমূলক’ আচরণের সমালোচনা করেন তিনি।
জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন বন্ধে ইসরায়েলকে জবাবদিহিতায় বাধ্য করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বানও জানান আবদুল্লাহ।
এদিকে গাজায় হামলার প্রতিবাদে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে কয়েক শ মানুষ বিক্ষোভ করেছে।