গাজা ভূখণ্ডের একটি ভবন বিমান হামলায় ধসিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। এই ভবনে কাতারভিত্তিক চ্যানেল আল জাজিরা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) দপ্তর অবস্থিত।
শনিবার ইসরায়েল ১৩ তলার ‘জালা টাওয়ার’ নামে ওই ভবনটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। ওই হামলায় কেউ হতাহত হয়েছে কিনা জানা যায়নি। ভবনটিতে অফিস ছাড়াও বেশ কিছু আবাসিক ফ্ল্যাট রয়েছে।
হামলার এক ঘণ্টা আগে ভবনের অধিবাসীদের বোমা হামলার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়।
এক টুইট বার্তায় আল জাজিরা জানায়, আল-জাজিরাসহ আরও কয়েকটি বার্তা সংস্থার দপ্তর এই ভবনে অবস্থিত।
এপির এক সাংবাদিক বলেন, হামলার আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ভবনের মালিককে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়।
এএফপি জানায়, ভবনের মালিক ইসরায়েলি বাহিনীর কাছ থেকে ভবন খালি করার জন্য আরও ১০ মিনিট সময় বেশি দেয়ার অনুরোধ করেন। তবে তার সেই অনুরোধ রক্ষা করা হয়নি।
আল জাজিরার এক সংবাদিক সাফওয়ান আল কাহালুত হামলার আগ দিয়ে ওই ভবনেই ছিলেন। তিনি বলেন, খবর পাওয়ার পর তিনি ও তার সহকর্মীরা ব্যক্তিগত ও অফিসের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিশেষ করে ক্যামেরা নিয়ে বের হয়ে যান।
‘আমি ওই ভবনে ১১ বছর কাজ করেছি। ভবনটির ছাদ থেকে বহু লাইভ সম্প্রচার করেছি আমরা। চোখের সামনে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র এসে ভবনটিতে আঘাত করে। এরপরই হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ে ভবনটি।’
তিনি বলেন, ওই ভবনে সহকর্মীদের সঙ্গে বহু স্মৃতি রয়েছে আমার।
ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাসের সশস্ত্র গোয়েন্দা শাখার সরঞ্জাম ওই ভবনে রাখা হত। এ কাজে ভবনটিতে অবস্থিত গণমাধ্যমের একটি দপ্তরকে ব্যবহার করত তারা। নাম না বললেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আল জাজিরাকে লক্ষ্য করেই এ মন্তব্য করে।
তবে গাজায় ইসরায়েলের ‘খবর’ দিয়ে ভবন ধসিয়ে দেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গাজার বহু ভবন এভাবে ধসিয়ে দেয়া হয়েছে।
কাহালুত বলছিলেন, এ ধরনের বিমান হামলায় যারা বাড়িঘর হারায় তাদের মানসিক অবস্থা কেমন থাকে তা অন্য কেউ বুঝতে পারবে না। এ যেন এক সকালে ঘুম থেকে উঠে জানতে পারা, আপনার পুরো পেশাজীবন আর স্মৃতির সঙ্গে কেউ আপনার কর্মস্থলকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
গাজায় গত সোমবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ১৪০ ফিলিস্থিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩৯টি শিশু ও ২২ নারী রয়েছেন।
এছাড়া গাজা থেকে ছোড়া হামাসের রকেটে আটজন ইসরায়েলি নিহত হয়। এদের মধ্য পাঁচ বছর বয়সী একটি শিশু ও এক সেনা রয়েছে।