মঙ্গল গ্রহে সফলভাবে মহাকাশযান অবতরণ করাতে পেরেছে চীন।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম শনিবার মঙ্গলে রোবট অবতরণ করানোর কথা জানিয়েছে।
ছয় চাকার ঝুরং নামের রোবটটি গ্রহের উত্তর গোলার্ধের ইউটোপিয়া প্ল্যাটিনিয়াকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে ধরে এগিয়ে যায়।
যানটি নামার সময় একটি সুরক্ষিত ক্যাপসুল, একটি প্যারাস্যুট ও রকেট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরূপ আবহাওয়াতেও সফলভাবে রোবটটির অবতরণকে বড় ধরনের অর্জন হিসেবেই দেখছে চীন।
মঙ্গলে এতদিন পর্যন্ত শুধু যুক্তরাষ্ট্র সফলভাবে মহাকাশযান অবতরণ করাতে পেরেছিল। চীন সেই হিসাবে দ্বিতীয় দেশ হয়ে মঙ্গলে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিল।
ঝুরং অর্থ আগুনের ঈশ্বর। মহাকাশযানটি মঙ্গলবার তিয়েনওয়েন-১ কক্ষপথে যায়। এটি গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রহের ওপর এসে পৌঁছেছিল।
যানটি একটি সুরক্ষিত স্থানে অবতরণ করানোর জন্য ইউটোপিয়ায় সমীক্ষা চালায়। অবতরণ করানোর অনেক আগেই উচ্চ রেজ্যুলেশনের ছবি নেয়া শুরু হয়।
ছবি নেয়ার উদ্দেশ্য ছিল, এমন একটি জায়গা বাছাই করা যেখানে রোবটটির অবতরণ সহজ হয়। এমন জায়গা খোঁজা হচ্ছিল যেখানে বড় কোনো পাথর নেই।
চীনের প্রকৌশলীরা খুব সতর্কতার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
পৃথিবী থেকে মঙ্গলের দূরত্ব ৩২ কোটি কিলোমিটার। এই দূরত্ব থেকে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি পৃথিবীতে আসতে সময় লাগবে কমপক্ষে ১৮ মিনিট।
ঝুরং অবতরণ করানোর প্রতিটি ধাপই খুব সাবধানে ও নিজস্বতার সঙ্গে করতে হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট প্রটোকল মেনে সেটি অবতরণ করানো হয়েছে বলে জানিয়েছে চীন।
অবতরণের সময় প্রথমে ক্যাপসুলটি মার্টেন বায়ুর চাপ ধীরে ধীরে কমিয়ে এনে নামতে শুরু করে। এর পরপরই এর গতি কমাতে প্যারাস্যুটটি খুলে যায়। শেষ পর্যন্ত রোবটটি রকেটচালিত যান থেকে ধীরে ধীরে মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করে।
চীন দীর্ঘদিন থেকেই মঙ্গলে যান পাঠানোর চেষ্টা করে আসছে। শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টা সফল হলো। এর আগে চীন নিজেদের ছাপ রেখেছে চাঁদেও।
ঝুরং রোবটটি মঙ্গলে অবতরণ করাতে গত ৯০ দিন দেশটির বিজ্ঞানীরা কঠোর পরিশ্রম করেছেন বলে জানায় চীন। ২৪০ কেজি ওজনের রোবটটির পুরোটাই সৌরশক্তিনির্ভর।
মঙ্গলে মহাকাশযানটির সফল অবতরণের পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।