যুক্তরাষ্ট্রে হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় ডেরেক শভিনসহ মিনিয়াপোলিসের সাবেক চার পুলিশ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করেছেন ফেডারেল গ্র্যান্ড জুরি।
ফ্লয়েডের নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার প্রকাশিত তিনটি অভিযোগপত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে।
অভিযোগপত্রের তথ্যের বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শভিন, তার সঙ্গী তিন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা থমাস লেন, তউ থাও ও জে অ্যালেকজান্ডার কুয়েং স্বেচ্ছায় ফ্লয়েডের নাগরিক অধিকার খর্ব করেছেন। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে নাগরিক অধিকার নিশ্চিতের প্রশ্নে ‘আইনের বাইরে গিয়ে ব্যক্তিস্বাধীনতা লঙ্ঘন না করতে’ স্পষ্ট নির্দেশ দেয়া আছে।
২০২০ সালের ২৫ মে ফ্লয়েডকে আটকের পর রাস্তার ওপরই নয় মিনিটের বেশি সময় তার ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে চাপ দিতে থাকেন শভিন। দীর্ঘক্ষণ কাকুতি-মিনতির পর দম আটকে সেখানেই মারা যান ফ্লয়েড।
এ ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগে এপ্রিলে শভিনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। তবে নতুন করে বিচারের জন্য আপিল আবেদন করেছেন শভিন।
ফ্লয়েডের ওপর অকারণে পুলিশি ক্ষমতা, শক্তি প্রয়োগ ও বিচার-বহির্ভূতভাবে আটকে রাখার অভিযোগও আনা হয়েছে শভিনের বিরুদ্ধে।
শ্বেতাঙ্গ এই পুলিশ কর্মকর্তা ২০১৭ সালেও ১৪ বছরের এক কিশোরকে গ্রেপ্তারের বদলে তার ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে চাপা দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিনা বিচারে আটক ফ্লয়েডকে ছেড়ে না দিয়ে তার নাগরিক অধিকার খর্ব করেছেন বলে থাও আর কুয়েঙের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। এমনকি পায়ের নিচে যখন ফ্লয়েডের শ্বাসরোধ হচ্ছিল, তখন শভিনকে তারা বাধা দেননি বলেও রয়েছে অভিযোগ।
অভিযুক্ত চারজনই সঠিক সময়ে ফ্লয়েডকে চিকিৎসার আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছেন।
ফ্লয়েড হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার্স’ নামে গণবিক্ষোভের মুখে গত বছরের মে মাসে বহিষ্কৃত হন প্রধান অভিযুক্ত শভিনসহ চার পুলিশ কর্মকর্তা।
যুক্তরাষ্ট্রে হেফাজতে আসামিদের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ও বিচার বেশ বিরল ঘটনা। এ কারণে ফ্লয়েড হত্যার বিচারকে দেশটির আইনি ব্যবস্থায় পরিবর্তনের সূচনা হিসেবে দেখছেন অনেকে।