ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সহিংসতায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন।
এ সহিংসতার জন্য বিজেপিকে দায়ী করে জনগণকে শান্ত হতে বলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গসহ চার রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এক অঞ্চলের বিধানসভার ফল প্রকাশ হয় রোববার। এতে ২৯৪ আসনের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ভোট হওয়া ২৯২টির মধ্যে মমতা নেতৃত্বাধীন তৃণমূল জোট পায় ২১৩টি। অন্যদিকে বিজেপি জোট পায় ৭৭টি আসন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফল পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় বিজেপি সভাপতি জেপি নদ্দার নেতৃত্বে বিজেপি নেতারা মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে আসছেন।
দলটি মমতার শপথের দিন বুধবার দেশব্যাপী বিক্ষোভের কর্মসূচি দিয়েছে।
প্রতিবেদন চাইল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতার ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছ থেকে প্রতিবেদন চেয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পশ্চিমবঙ্গের গভর্নর জগদ্বীপ ধনখড় সোমবার বেলা প্রায় ৫টায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে সন্ধ্যায় তিনি এক ঘণ্টার জন্য বৈঠক করেন মমতার সঙ্গে।
ওই সময় ধনখড় সহিংসতার বিষয়টি সামনে এনে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর কাছ থেকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আহ্বান জানান ধনখড়।
বিজেপির দাবি, রাজ্যের উত্তরে শীতলকুচি থেকে দক্ষিণে কলকাতা পর্যন্ত সহিংসতায় তাদের কমপক্ষে ছয় কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া দলটির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলার পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয়েছে দলীয় কার্যালয়।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, তাদের পাঁচ সমর্থক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন পূর্ব বর্ধমান ও একজন হুগলির।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভানগড়ে ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের এক কর্মী নিহত হয়েছেন।
বিধানসভা নির্বাচনে ভানগড়েই একটি আসন পেয়েছিল বাম ও কংগ্রেস জোট সংযুক্ত মোর্চা।
‘বাংলা শান্তিপ্রিয় জায়গা’
জনগণকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে মমতা বলেন, বাংলা শান্তিপ্রিয় জায়গা। নির্বাচনের সময় সহিংসতার কিছু ঘটনা ঘটেছে। বিজেপি ও সিএপিএফ ব্যাপক নির্যাতন করেছে।
‘তবে আমি সবাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। হিংসায় জড়াবেন না। বাদানুবাদ হলে পুলিশকে জানান। পুলিশ অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে পারবে।’
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, মমতার শান্তির আহ্বান ভালো কথা। তবে পরিস্থিতি শান্ত না হলে বিক্ষোভের পাশাপাশি ধরনায় বসবে বিজেপি।
তিনি বলেন, ‘ফল প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে আমাদের দলের পাঁচ থেকে ছয় কর্মী খুন হয়েছেন। ১ হাজার বাড়ি ও অফিস ভাঙচুর হয়েছে। বিজয়ের পরও তৃণমূলের এ সহিংসতা কেন?’