বিজেপির আসল পরিবর্তন স্লোগানকে উড়িয়ে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের প্রত্যাবর্তন ঘটেছে।
আর এ কৃতিত্বের অনেকটাই ভাতিজা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাপ্য বলে মনে করেন খোদ তৃণমূল নেত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, ‘এবার ভোটে ওয়্যার রুম ও কর্মসূচি তৈরি করে, আগাগোড়া ভোট যুদ্ধ পরিচালনা করেছে ওরা।'
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে অভিষেকের পরিণত নেতা হিসেবে নিজেকে ও রাজ্য রাজনীতিতে তুলে ধরা উল্লেখযোগ্য হয়ে থাকবে।
মমতা পুরো ২৯৪টি বিধানসভা আসনের দায়িত্ব নিয়ে হুইল চেয়ারে বসে ভোট প্রচার করেন। একইভাবে তৃণমূলের যুবনেতা অভিষেক ভোট প্রচারে গোটা রাজ্য চষে ফেলেন। মমতার পাশে ভোট প্রচারে একমাত্র অভিষেক সবার নজর কাড়েন।
পশ্চিমবঙ্গে টানা ১০ বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের শাসন চলছে। এবারের নির্বাচনে সরকারবিরোধীদের সামলানোর চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের ছিল। বিভিন্ন দুর্নীতিতে তৃণমূল সরকার ও দলের নেতাদের জড়িয়ে পড়ায় মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া আগে থেকেই ছিল।
এ ছাড়া এবারের ভোটে ছিল ধর্মীয় মেরুকরণ। জোরালোভাবে জাতপাতের রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আদিবাসী, রাজবংশী, মতুয়া ভোটারদের হিসাব কষা শুরু হয়েছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে বিজেপি ও তৃণমূল উভয় দলই ওইসব ভোটের অংশীদারি পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
পাশাপাশি উঠে আসে মমতার বিজেপিকে ‘বহিরাগত’ হিসেবে আক্রমণ আর 'পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি বাংলার মেয়েকে চায়' আবেগকে প্রচারে তুলে আনার কৌশল।
বিভিন্ন প্রচার সভায় মমতার সুরে আক্রমণ শানিয়ে অভিষেক বলেন, ‘আমি নাম করে বলছি, অমিত শাহ বহিরাগত। দিল্লির বিজেপি নেতারা বহিরাগত।’
অভিষেকের পাশে দাঁড়িয়ে মমতা বলেছিলেন, ‘যদি দিদি আর ভাতিজা বলতে হয়, তবে আমি অমিত শাহকে চ্যালেঞ্জ করছি, আগে অভিষেকের সঙ্গে ফাইট করুন। দেন টেল দ্য নেম।'
এসব আক্রমণে থেমে থাকেনি বিজেপিও। অভিষেককে কয়লা পাচারকারী, গরু পাচারকারী বলার পাশাপাশি অভিষেকের স্ত্রী সারিকাকেও আক্রমণ করে বিজেপি।
অভিষেকও জোরালো আক্রমণ করে গেছেন বিজেপি নেতাদের। তিনি বলেন, ‘যারা বলেন সুনার বাংলা- তারা গড়বে সোনার বাংলা? বিজেপি বাংলার সংস্কৃতি নষ্ট করছে। বিজেপি বহিরাগত।'
মোদি-অমিত শাহর সঙ্গে টক্কর দিয়ে লড়াই করে নির্বাচনে জিতে গেছেন অভিষেক।
যুব তৃণমূল সভাপতি ও তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তরাধিকার অভিষেক প্রচার সভায় বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘যতই নাড়ো কলকাঠি, নবান্নে এবার হাওয়াই চটি।’