বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিজেপিকে উড়িয়ে দিয়ে কলকাতার মসনদ মমতার

  •    
  • ২ মে, ২০২১ ২০:১৭

রাজ্যের ২৯৪ আসনের বিধানসভায় একক সরকার গঠনে ‘ম্যাজিক ফিগার’ হিসেবে কমপক্ষে ১৪৮টি আসন দরকার ছিল তৃণমূলের।তবে এরই মধ্যে ২০০-এর বেশি আসনে জয় নিশ্চিত করেছেন এ দলের প্রার্থীরা। অন্যদিকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি জয় পেয়েছে ১০০ -এর কম আসনে।

নিজ আসন নন্দীগ্রামে বিজেপির প্রার্থীর কাছে নাকাল হলেও পশ্চিমবঙ্গে টানা তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। তার দল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বিপুল ব্যবধানে হেরেছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি।

একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করছে তৃণমূল কংগ্রেস।

রাজ্যের ২৯৪ আসনের বিধানসভায় একক সরকার গঠনে ‘ম্যাজিক ফিগার’ হিসেবে কমপক্ষে ১৪৮টি আসন দরকার ছিল তৃণমূলের। তবে এরই মধ্যে ২০০-এর বেশি আসনে জয় নিশ্চিত করেছেন এ দলের প্রার্থীরা। অন্যদিকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি জয় পেয়েছে ১০০-এর কম আসনে।

পশ্চিমবঙ্গ, অসম, কেরালা, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিসহ ভারতের পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয় রোববার। তবে উত্তেজনা শুরু থেকেই সবচেয়ে বেশি বাংলাভাষী রাজ্যটিতে, মমতা বনাম মোদি লড়াইয়ে জয় কার- তা নিয়ে।

সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেদের দূর্গ অটুট রেখেছে তৃণমূল।

সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল বক্তব্যে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলা থাকছে আমাদেরই। বিজয় উদযাপন আমরা এখনই করব না। মহামারি শেষে বড় আনন্দ উদযাপন হবে।’

নিজে হারলেও দলের জয়ের জন্য বাংলার মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘বাংলার জয়ের জন্য সকলকে অভিনন্দন। বাংলার জয়, মানুষের জয়। বাংলা আজ ভারতকে বাঁচিয়েছে।’

জয় নিয়ে উচ্ছ্বাস জানালেও ভারতের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ফল নিয়ে বিভ্রান্তির অভিযোগ জানাতে আদালতে যাবেন।

মমতা বলেন, ‘ভয়াবহ পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন। কমিশনের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক বেঞ্চে যাব। ২২১ আসনে জেতার লক্ষ্য ছিল। সন্দেহজনক কিছু বিষয় লক্ষ্য করেছি। আমার কাছে অভিযোগ রয়েছে, রায় ঘোষণার পর কারচুপি হয়েছে। এগুলো নিয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানাব।’

নির্বাচনের ফল নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেয়নি নির্বাচন কমিশন।

টানা তিন মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা

পশ্চিমবঙ্গে প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হ্যাটট্রিক করতে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো কোম্পানি ও ২০০৭ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে সালেম গোষ্ঠীর কেমিক্যাল হাবের জন্য বামফ্রন্ট সরকারের জমি সংগ্রহের বিরুদ্ধে ভূমি রক্ষা আন্দোলন গড়ে তোলেন মমতা।

সিঙ্গুরের জমি দখলের প্রতিবাদে ধর্মতলায় ২৬ দিন অনশন করেন। ধর্নার ১৫তম দিনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে। কারখানার কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় টাটা।

সংকট সমাধানে রাজভবনে তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর মধ্যস্থতায় পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও মমতা ব্যানার্জি মুখোমুখি হন। কিন্তু কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় সে বৈঠক।

২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে জমি বিতর্কে পুলিশের গুলিতে ১৪ জন নিহত হন।

সিঙ্গুর আর নন্দীগ্রামের এসব ঘটনা ধরে ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের ৩৪ বছরের দূর্গ নাড়িয়ে দেয়। ক্ষমতায় আসেন মমতা।

২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রধান ইস্যু ছিল চিটফান্ড কেলেঙ্কারি।

তৃণমূলের একাধিক নেতা ও প্রশাসনের একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম জড়ায় সারদা, রোজভ্যালি, আইকোর মতো সংস্থার হাজার হাজার কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে।

এসব ঘটনায় প্রতারণার শিকার শতাধিক মানুষ আত্মহত্যা করেছেন বলেও রয়েছে বিতর্ক।

পরবর্তীতে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়। তৃণমূলের কয়েকজন নেতা এই ঘটনায় জেলও খাটে, যার তদন্ত এখনও চলছে।

এর প্রেক্ষাপটে সে সময় তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন, ‘সব কেন্দ্রে আমি প্রার্থী, ভোট আমাকে দিন। প্রার্থী নয়, আমাকে দেখে ভোট দিন।’

মমতার ম্যাজিকে ভর করেই সে নির্বাচনে মমতার নেতৃত্বে বিপুল আসনে জয় পেয়ে সরকার গঠন করে তৃণমূল কংগ্রেস।

এবারের নির্বাচনে প্রধান ও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার হাতিয়ার ছিল ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি ও উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরোধিতা।

তৃণমূল সরকারের ১০ বছরের উন্নয়নকে পুঁজি করে ভোটযুদ্ধে নামেন তিনি। ‘বাংলার মেয়ে, বাংলার দিদি’ স্লোগানে বাঙালির আবেগকেও কাজে লাগান তিনি।

২০০-এর বেশি আসনে বিজেপির জেতার হুঙ্কারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সে কাজ করে দেখিয়েছেন মমতাই।

যদি নিজ আসন নন্দীগ্রামে না জেতেন, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া দলের নবনির্বাচিত বিধায়করা পরিষদীয় নেতা নির্বাচিত করবেন। সেই পরিষদীয় নেতা বিধায়ক না হলেও কোনো অসুবিধা নেই।

অবশ্য এভাবে মুখ্যমন্ত্রী হলে শপথ নেয়ার ছয় মাসের মধ্যে কোনো একটি বিধানসভা কেন্দ্র বা বিধানপরিষদ থেকে নির্বাচিত হতে হবে রাজ্য সরকারের প্রধানকে।

তবে পশ্চিমবঙ্গে বিধানপরিষদ ব্যবস্থা নেই বলে মমতাকে বিধানসভায় নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর