নন্দীগ্রামে নিজ আসনে পিছিয়ে থাকলেও ফলাফলের যা চিত্র তাতে তৃতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করতে চলেছে মমতার তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সঙ্গে কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির দিকে রওনা হতে শুরু করেছেন দলের হেভিওয়েট বেশকিছু নেতারাও।
এমনকি মমতা নিজেই বিকেলের দিকে ভার্চুয়ালি একটি ব্রিফিং করতে পারেন নিজেদের অবস্থান নিয়ে।
পুরো রাজ্যের ফল গণনায় নজর রাখতে অবশ্য আগে থেকেই কালীঘাটের বাড়িতে কন্ট্রোল রুম চালু করেছে তৃণমূল। সেখান থেকে প্রার্থী ও নির্বাচনি এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন মমতা; করছেন নজরদারি।
বিজেপি দুই তৃতীয়াংশ আসনে জিতে বাংলা দখলে নেয়ার যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল আপাতত সেটি আর হলো না। বিজেপির অধরা বাংলা তার মেয়ের হাতেই থাকছে।
ভোটের ফলে এরই মধ্যে যতটা এগিয়েছে তৃণমূল, তাতে বিজেপি তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে বলে আর মনে করেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস বিজয়ের দিকে এগিয়ে গেছে।
এরই মধ্যে তৃণমূল নেতা অভিষেক ব্যানার্জি, প্রশান্ত কিশোর কালীঘাটের বাড়িতে পৌঁছে গেছেন। খালি পড়ে রয়েছে বিজেপির হোস্টিংস অফিস। কালীঘাটে মমতার বাড়ির সামনের মাঠে বসানো হয়েছে জায়ান্ট স্ক্রিন।
সূত্রের খবর, দুপুরের পর তৃণমূল নেত্রী ভার্চুয়াল বক্তৃতা দিতে পারেন। দলীয় কর্মী-সমর্থকরা কালীঘাট মুখ হচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতির জন্য কমিশন বিজয় মিছিল, জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
তৃণমূল নেত্রীর জয়ের ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেস আশাবাদী। তৃণমূল নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, মমতা ব্যানার্জি ফের রাজ্যের তৃণমূল সরকার গঠন করছে।
নয় রাউন্ডের ভোট গণনা শেষে ভবানীপুর কেন্দ্রে শোভন দেব চট্টোপাধ্যায় ২২ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। বিধান নগর কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছেন সুজিত বসু। বিজেপির সব্যসাচী দত্ত পিছিয়ে পড়েছেন।
কৃষ্ণনগর উত্তরে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপি মুকুল রায়। কৌশানির থেকে তিনি ৯ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।
মুর্শিদাবাদের সব আসনে পিছিয়ে কংগ্রেস। কাকদ্বীপ কেন্দ্রে এগিয়ে তৃণমূলের মন্টু রাম পাখিরা।
এবার জঙ্গলমহলে গেরুয়া শিবিরে ধস নেমেছে। গোপীবল্লভপুর ১২ হাজার ১৮২ ভোটে এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস। ঝাড়গ্রামে ১০ হাজার ৬৫৩ ভোটে এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস। বিনপুরে ২৪ হাজার ৫২৩ ভোটে এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস।
নয়া গ্রামে ৩ হাজার ২৯৮ ভোটে এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস। ডোমজুড়ে বিজেপি প্রার্থী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ৩০ হাজার ভোটে পিছিয়ে পড়েছেন। চন্ডিপুরে এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থী সোহম চক্রবর্তী।
চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগেই কার্যত হার স্বীকার করলেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
তিনি বলেন, 'জয় হলে সেটা মমতারই জয়। কেন এমন হলো জানতে চেয়েছেন অমিত শাহ।'
বাবুল সুপ্রিয়, লকেটের পিছিয়ে থাকা আশ্চর্যের বলে মনে করেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'মানুষ মমতার সঙ্গে আছেন। বহিরাগতদের বাংলা দখলের চেষ্টা মানুষ ভালোভাবে নেয়নি।'