বল্গাহীন করোনা সংক্রমণের আবহে রবিবার সকাল সাতটা থেকে শুরু হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ভোট গণনা।
গত ২৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ২৯ মে পর্যন্ত আট দফায় ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হয়। ২৯৪ আসনের রাজ্য বিধানসভার ২৯২ আসনে ভোট হয়েছে।
দুই প্রার্থীর মৃত্যুতে মুর্শিদাবাদ জেলার সমশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ করা হবে।
রোববার রাজ্যের ১০৮টি ভোট গণনাকেন্দ্রে ২৯২টি আসনের ভোট গণনা হবে। এবারের গণনা পদ্ধতির কিছু পার্থক্য রয়েছে। মূলত কোভিডের জন্যই সেই পার্থক্য বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
১০৮টি গণনা কেন্দ্রের জন্য কাউন্টিং হলের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে কাউন্টিং হল ছিল ৩৮৫টি। এখন তা বেড়ে হচ্ছে ৭০৬টি।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ, গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে গেলে অবশ্যই হাতে থাকতে হবে দুটি কোভিড টিকা নেয়ার শংসাপত্র অথবা সরকারিভাবে স্বীকৃত স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট-এর নেগেটিভ রিপোর্ট।
দূরত্ববিধি বজায় রাখতে কাউন্টিং হল ও টেবিলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ফলে রাউন্ডের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আসবে। গণনা সর্বনিম্ন ১৭ রাউন্ড এবং সর্বোচ্চ ৩০ রাউন্ড ধরে হতে পারে। ফলে চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য বেশ কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।
গণনা কেন্দ্রে ঢোকার মুখে এবং স্ট্রং রুমের বাইরে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ১০৮টি গণনাকেন্দ্রের জন্য ২৫৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে কমিশন।
সাধারণ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে ২৯২ জন। এ ছাড়া বুথের বাইরে নজরদারির জন্য থাকবেন ১৫ জন পুলিশ পর্যবেক্ষক।
শুক্রবার থেকে কলকাতাসহ রাজ্যের জেলায় জেলায় দেখা গিয়েছে প্রার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীদের করোনা পরীক্ষার জন্য জোরদার তৎপরতা। জেলার নির্বাচন আধিকারিক অর্থাৎ জেলাশাসকের দপ্তর থেকে প্রতিটি রাজনৈতিক দল-সহ নির্বাচনের কাজে যুক্ত ব্যক্তি এবং সংবাদমাধ্যমের কর্মীদেরও জানিয়ে দেয়া হয়েছে শনিবারের মধ্যে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে গিয়ে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট-এর রিপোর্ট নেয়ার জন্য।
গণনাকেন্দ্রের পাশ থাকলে সেই ব্যক্তিকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট রিপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘বিশেষ প্রাধান্য’ দেয়ার কথাও বলা হয়েছে সরকারি নির্দেশিকায়।
শুক্রবার সকাল থেকেই জেলার প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভিড় জমান গণনাকেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত কর্মী এবং রাজনৈতিক শিবিরের প্রতিনিধিরা। স্বাস্থ্যকর্মীরাও দ্রুততার সঙ্গে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু করে দিয়েছেন।
করোনা তাণ্ডবের পাশাপাশি ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা।
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, মালদহের মানিকচকে নুরপুর গ্রামে বিজেপি এবং সংযুক্ত মোর্চা আশ্রিত সন্ত্রাসীরা তাদের কর্মীদের উপর হামলা করেছে। দুইজন তৃণমূলকর্মীকে এলোপাতাড়ি ধারাল অস্ত্রের কোপ মারা হয়েছে। যদিও সংযুক্ত মোর্চা ও বিজেপির তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
শুক্রবার ও শনিবার বিক্ষিপ্ত গোলমাল হয়েছে বীরভূমের লাভপুর ও নানুরে। মেদিনিপুরের নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় হামলা,পাল্টা হামলার অভিযোগ উঠেছে।