পশ্চিমবঙ্গে চরম অক্সিজেন সংকটের মধ্যে আলিপুর উত্তীর্ণ ভবনে রোববার থেকে অক্সিজেন পার্লার চালু করছে রাজ্য সরকার।
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ক্রমাগত অক্সিজেন চাহিদা মেটাতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পার্লার থেকে সুবিধামতো অক্সিজেন গ্রহণ করার সুবিধা থাকবে।
উত্তীর্ণ ভবন আগেই সেফ হোমে রূপান্তরিত হয়েছে। শয্যার চাহিদা মেটাতে একে মেকশিফট কোভিড হাসপাতালেও রূপান্তরিত করা হতে পারে।
রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, এখানে আপাতত ২৫টি শয্যা থাকছে। যারা চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে গেছেন কিন্তু অক্সিজেন সাপোর্ট দরকার, তাদের জন্য এই অক্সিজেন পার্লারের ব্যবস্থা।
অক্সিজেন সংকট মোকাবিলায় উদ্যোগী হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীও।
মুর্শিদাবাদ জেলার করোনা রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেন ঘাটতি মেটাতে বহরমপুরের সংসদ সদস্য তার নির্বাচনি এলাকায় অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়েছেন।
জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদীকে লেখা চিঠিতে তিনি সাংসদ উন্নয়ন তহবিলের টাকায় ভেন্টিলেটর যুক্ত দুটি অ্যাম্বুলেন্স কেনার কথাও বলেছেন।
রাজ্যের অক্সিজেন সংকটের দায় কেন্দ্রের ঘাড়ে চাপিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, বাংলার অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থাকে উত্তরপ্রদেশে সরিয়ে নিয়ে গেছে কেন্দ্র। তাই রাজ্যে অক্সিজেন সমস্যা বাড়ছে।
মমতা বলেন, ‘অক্সিজেন সংকট মোকাবিলায় আমরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনটা তুলে নিয়েছি। আগে ১৫ হাজার ছিল, আরও ৫ হাজার সিলিন্ডার নিয়েছি। জোগান আরও বাড়াতে বলেছি।’
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কেন্দ্রের ব্যর্থতার জন্য করোনার বাড়বাড়ন্ত। ২০২০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অক্সিজেন মজুদ রাখার কথা বললেও প্রধানমন্ত্রী কোনো বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের অক্সিজেন মজুদের ব্যাপারে কিছু বলেননি।
তবে বিজেপি বলছে, কেন্দ্র বিনা মূল্যে টিকা দেয়া সত্ত্বেও রাজ্যের ব্যর্থতার জন্য আজকের এই করোনা পরিস্থিতি।
শনিবার দুপুরে কলকাতা বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্টের পাইপলাইনে বরফ জমে অক্সিজেন সরবরাহে বিপত্তি ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, বিকল্প লাইনে অক্সিজেন সরবরাহের চেষ্টা চলছে। রোগীদের অক্সিজেন পেতে কোনো সমস্যা হবে না।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভ্যাকসিন, অক্সিজেন পাওয়া নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। সরবরাহের অভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রে টিকা প্রদান বন্ধ রাখা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো ভোটকর্মীদের করোনা পরীক্ষা করা নিয়ে হাওড়ার শৈলেন মান্না স্টেডিয়ামে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। প্রথমে করোনা পরীক্ষা ঠিকমতো চললেও এক স্বাস্থ্যকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়লে এই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ভোটকর্মীরা করোনা পরীক্ষার কিট নিয়ে নিজেরাই পরীক্ষা করেন।
ভোটকর্মীদের কেউ কেউ জোর করে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট লিখিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ১০টি টেবিলে কাজ চলছিল। দুটি টেবিলে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। ওই দুটি টেবিলের পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।