সৌদি আরবের মালিকানাধীন বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল কোম্পানি আরামকোর এক শতাংশ শেয়ার বিক্রি করা হবে।
এ নিয়ে আন্তর্জাতিক এক শীর্ষস্থানীয় জ্বালানি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করছে সৌদি সরকার।
দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এ বার্তা দেন বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২০১৯ সালের শেষের দিকে সৌদির শেয়ার বাজারে নাম লেখানো আরামকো সম্পর্কে এমবিএস বলেন, আগামী দুয়েক বছরের মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আরামকোর আরও শেয়ার বিক্রির সম্ভাবনা আছে।
তিনি বলেন, ‘আরামকোর এক শতাংশ শেয়ার বিক্রির বিষয়ে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এক জ্বালানি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চলছে। এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশে আরামকোর বিক্রি বৃদ্ধি পাবে।’
এমবিএস বলেন, ‘বেশ কিছু কোম্পানির সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। আরামকোর শেয়ারের কিছু অংশ সৌদি পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডে (পিআইএফ) ও কিছু অংশ সৌদির শেয়ারবাজারে স্থানান্তর করা হতে পারে।’
সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ এর পঞ্চমবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার টেলিভিশনে এমবিএসের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। সেখানে সৌদি অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলাপকালে আরামকোর প্রসঙ্গ টানেন তিনি।
সৌদি অর্থনীতি পুরোটাই তেল রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল। অনবায়নযোগ্য এ জ্বালানি খাত ছাড়া আর কোন কোন খাতে সৌদি অর্থনীতি চাঙ্গা হতে পারে, তারই উদ্যোগ হলো ভিশন ২০৩০।
সৌদি অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনার পরিকল্পনা
বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ২০১৯ সালে শেয়ার বাজারে আরামকোর অন্তর্ভুক্তিকে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণ কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে দেখা হয়।
শেয়ার বাজারে ২৫.৬ বিলিয়ন ডলার মূল্য বৃদ্ধি করে আরামকো। পরে ‘গ্রিনশু অপশন’ নামে প্রকল্পের অধীনে আরও শেয়ার বিক্রি করে রাষ্ট্রায়ত্ত ওই প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে আরামকোর শেয়ারমূল্য ২৯.৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।
সৌদি অর্থনীতির চেহারা পাল্টে দিতে বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আরামকোর দিকে ক্রমাগত ঝুঁকছেন সৌদি যুবরাজ।
সম্প্রতি ভিশন ২০৩০ বেশ কয়েকটি প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে। সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দমনমূলক পদক্ষেপ ও ২০১৮ সালে সৌদি সমালোচক জামাল খাশোগজি হত্যার ঘটনায় গুটিয়ে যায় বিনিয়োগকারীরা। আর গত বছরে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস মহামারি অর্থনীতি ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়াকে আরও বাধাগ্রস্ত করে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সৌদি আরবের অর্থনীতি ৩০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংকুচিত হয়।
সাক্ষাৎকারে সৌদি যুবরাজ বলেন, গত বছর ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সাময়িক। পাঁচ বছর পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকবে। সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য ভ্যাট ৫ ও ১০ শতাংশের ভেতর রাখা।
সৌদি সরকারের আয়কর প্রবর্তনের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানান এমবিএস।
তিনি বলেন, ‘চলতি বছর বেকারত্বের হার ১১ শতাংশের নিচে নামবে। এরপর ১০ শতাংশের মতো থাকবে এ হার। ২০৩০ সালে দেশে (সৌদি) বেকারত্বের হার হবে সাত শতাংশ।’