করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কায় হাহাকার চলছে ভারতে। নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) দায়ী করেছে দেশটির একটি আদালত।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে চলমান বিপর্যয়ের জন্য ইসিই একমাত্র দায়ী বলে মন্তব্য করেছে মাদ্রাজের উচ্চ আদালত।
ওই আদালতের বিচারকরা সোমবার বলেন, ইসির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ গঠন করলেও নৈতিকভাবে তা ভুল হতো না।
করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যেই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করায় ইসির কঠোর সমালোচনা করে আদালত।
সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, আদালতের এসব মন্তব্যের আনুষ্ঠানিক আদেশপত্র হাতে পেলে এর জবাব দেবে ইসি।
আদালতের আদেশ অনুযায়ী দীর্ঘ নির্বাচনি প্রচারে মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাসহ করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে ইসি ব্যর্থ হয়েছে বলে মত দিয়েছেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
তামিলনাড়ুর পরিবহনমন্ত্রী এমআর বিজয়াবস্করের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানিতে এসব কথা বলেন তিনি। নিজ আসনে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহযোগিতা চেয়ে আবেদনটি করেন মন্ত্রী বিজয়াবস্কর।
আগামী ২ মে ফল ঘোষণার দিন করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি কার্যকরের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কর্মপরিকল্পনা দেখতে চেয়েছে আদালত। তা না হলে ভোট গণনা বন্ধের রায় দেয়ারও হুমকি দেন বিচারপতি।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনি সমাবেশগুলো যখন হচ্ছিল, তখন কি আপনারা অন্য গ্রহে গিয়ে বসেছিলেন? জনস্বাস্থ্যের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই। এটি উপেক্ষার অর্থ হলো আপনাকে সাংবিধানিক দায়িত্ব মনে করিয়ে দেয়ার সময় এসেছে।’
আজ সন্ধ্যার আগে আদালতের এ সংক্রান্ত আদেশ জারি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরালা, আসাম ও পুদুচেরিতে বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই ভয়াবহ হারে বাড়তে থাকে করোনার সংক্রমণ। গত এক সপ্তাহে সারা ভারতে রেকর্ড সাড়ে ২২ লাখ মানুষের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যুহার বেড়েছে ৮৯ শতাংশ।
অন্য সব রাজ্যে ভোট শেষ হলেও পশ্চিমবঙ্গে এখনও এক দফা ভোট বাকি।
এমন পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার প্রচারণার অংশ হিসেবে রাজ্যে রোড-শো ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ইসি। আর সর্বোচ্চ ৫০০ জনকে নিয়ে জনসমাবেশ করা যাবে বলেও মত দিয়েছে কমিশন।
এর আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে তার পূর্বনির্ধারিত সফর বাতিল করেন মহামারির কারণে।
প্রচারণায় ইতি টেনেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তার প্রশ্ন, কেন মোদির ঘোষণা পর্যন্ত প্রচারণা বন্ধের সিদ্ধান্ত বিলম্বিত করল ইসি।