ইরাকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা দেয়া একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আগুনে অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত কমপক্ষে ৫০ জন।
দেশটির রাজধানী বাগদাদের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দিয়ালা ব্রিজ এলাকার ইবনে আল-খাতিব হাসপাতালে শনিবার মাঝরাতে এ ঘটনা ঘটে।
আশপাশের হাসপাতালের বিভিন্ন সূত্রের বরাতে দ্য গার্ডিয়ান ও বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, অক্সিজেন সিলিন্ডার সংরক্ষণে ত্রুটির কারণে হাসপাতালটিতে ওই অগ্নিকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে।
হাসপাতালের আরেকটি সূত্র জানায়, শনিবার মাঝরাতের দিকে হাসপাতালটির আইসিইউতে ৩০ জন করোনা রোগী ও তাদের আত্মীয়স্বজন অবস্থান করছিলেন। ওই সময় সেখানে আগুন লেগে হাসপাতালটির বেশ কয়েকটি ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। আগুনের হাত থেকে বাঁচতে হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনেরা ভবনটি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছেন।
ইরাকের নাগরিক সুরক্ষা সংস্থা দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে জানায়, ঘটনাস্থল থেকে ১২০ জন রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্য থেকে ৯০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে বাগদাদের হাসপাতালে আগুন লাগার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অবহেলাকে দায়ী করছেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছে অনেক ইরাকি।
বাগদাদের গভর্নর মোহাম্মদ জাবের তদন্ত কমিশন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ইরাক সরকারের মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও এর অন্যান্য সংস্থার ওপর করোনায় আক্রান্ত মানুষ নির্ভর করেছিলেন। চিকিৎসার বদলে আগুনে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এটি অপরাধ।’
এ ঘটনায় ইরাকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসান আল-তামিমিকে বরখাস্ত করে তাকে বিচারের আওতায় আনতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাধেমির প্রতিও আহ্বান জানায় কমিশন।
কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ওই ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কাদেমি। এ ছাড়া হাসপাতালটির পরিচালক, নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রধান ও প্রযুক্তিগত রক্ষণাবেক্ষণকারী দলকেও তদন্তের আওতায় জানান জোর দাবি জানান তিনি।
শনিবার ইরাকের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১০ লাখ ২৫ হাজার ২৮৮ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এতে মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ২১৭ জনের।