কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় করোনার তীব্র সংক্রমণের কারণে যখন নির্বাচনী প্রচার কমানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন, তখন প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিজেপি নেতারা বলেছিলেন , ‘ওরা হারবে জেনেই ময়দান থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।’
বিজেপির ওই নেতাদের মধ্যে ছিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। কিন্তু অবশেষে রাহুল গান্ধী ও মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই হাঁটল বিজেপি।
পশ্চিমবঙ্গে ষষ্ঠ দফার ভোটের আগে কোনো বড় জনসভা-মিছিল না করার কথা ঘোষণা দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বাম-কংগ্রেস, তৃণমূলের পর বিজেপি জানাল, করোনা সংক্রমণ বাড়ায় এই সিদ্ধান্ত।
গেরুয়া শিবির জানিয়েছে, তাদের সভা-মিছিলে ৫০০ জনের বেশি মানুষ অংশ নিবে না। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর সভাতেও বেশি লোকসমাগম করা হবে না।
রাজনৈতিক মহলের মতে, দেরিতে হলেও বুদ্ধি ফিরেছে বিজেপির। তবে পশ্চিমবঙ্গে আরও তিন দফা নির্বাচন বাকি। ইতোমধ্যেই রাজ্যে দৈনিক শনাক্ত পৌঁছেছে নয় হাজারের কাছাকাছি। এ অবস্থায় বড় জনসভা, রোড শো সংক্রমণকে আমন্ত্রণ জানানোর শামিল।
আগেই ভিড় কমানোর নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এরপরেও বিরাট রোড শো করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ সমাবেশ বন্ধে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলেন, ‘এটা একটা অজুহাত। আসলে অধিনায়ক তার জাহাজ ডুবতে দেখছেন।’
রবিশঙ্কর প্রসাদের ওই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই নির্বাচনি প্রচার সীমিত করার কথা ঘোষণা দিল বিজেপি।
পঞ্চম দফার ভোটের দিন আসানসোলে জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেই দিলেন, এত মানুষ দেখে তিনি আপ্লুত। নরেন্দ্র মোদীর এই বক্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সর্বত্র। যার জেরে কিছুটা ব্যাকফুটে বিজেপি।
তবে ভার্চুয়াল সভায় জোর দিচ্ছে দলটি। বাকি তিন দফার ভোটের প্রচারে ডিজিটাল মাধ্যমকে হাতিয়ার করতে চাইছে তারা। আরও বেশি করে ভার্চুয়াল সভা করবেন বিজেপির নেতারা।
এদিকে বিজেপির এই ঘোষণাকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলছেন, ‘আমাদের তরফে অনেক আগেই বাকি তিন দফার ভোট একদিনে করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কমিশনকে। আমরা ইতোমধ্যেই প্রচার কমিয়েছি। সংক্রমণ বাড়ছে, অনেক মানুষ মারা গেছেন। এত দেরিতে বিজেপি সেটা বুঝল।’
বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন বামপন্থি নেতা মহম্মদ সেলিমও। তিনি বলেন, ‘আমরাই প্রথম বড় জনসভা না করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। এতদিন পর বিজেপি সেটা বলল। এটা মানুষের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু না।’
বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘দলের অভিমত, এই পরিস্থিতিতে বড় জনসভা বিপজ্জনক। আগে মানুষের স্বাস্থ্য, তাই এ সিদ্ধান্ত।’