পঞ্চম দফার ভোট পরবর্তী সহিংসতায় উত্তপ্ত রাজ্যে এখন শুরু ষষ্ঠ দফার ভোট প্রচার। তারই সুবাদে বিজেপির অমিত শাহ আর তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির বাগযুদ্ধ চরমে উঠেছে। রোববার রাজ্যের একাধিক জায়গায় রোড শো ও সভা করেন সাবেক বিজেপি সভাপতি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইতিমধ্যে সমাপ্ত ভোটে তিনি ১২২ আসনে জয়লাভের আশা ব্যক্ত করেছেন। জবাবে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি বিজেপি বাংলা থেকে খালি হাতে ফিরবে বলে মন্তব্য করেছেন।
নদীয়ার বেথুয়াডহরিতে রোড শো করে অমিত শাহ বলেন, ‘পায়ে হেঁটে রাজ্যপালের কাছে ইস্তফাপত্র দিন দিদি। পাঁচদফার ভোটে ১২২টি আসনে জিততে চলেছে বিজেপি। ভোটের পাঁচ দফায় সুবিধা করতে না পেরে, হতাশায় ভুগছেন তৃণমূলের গুন্ডারা। কাটমানি সরকার দূর করবে মানুষ। ২ মে’র পর গরু পাচারও বন্ধ হবে।’
এদিকে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি রোববার নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতায় ভোট প্রচার করেন।
ঢাকুরিয়া ব্রিজ থেকে কালীঘাট মোড় পর্যন্ত হুইল চেয়ারে বসে রোড শো করেন তিনি।
তেহট্যের সভায় মমতা বলেন, ‘বিজেপি রাজ্যের মানুষ খুন করছে। বিজেপি বাংলার সম্প্রীতি নষ্ট করছে। ওরা দাঙ্গাবাজের দল। বাংলা থেকে বিজেপি খালি হাতে ফিরবে। বিজেপি বাইরে থেকে লোক এনে, বাংলায় করোনা ছড়াচ্ছে। বিজেপি বাংলার শত্রু।’
কার্যত পঞ্চম দফার ভোট পরবর্তী সহিংসতায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। সল্টলেকের দত্তাবাদে বিজেপি কর্মীদের মারধর ও গুলি করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মিনাখা সংযুক্ত মোর্চা কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেটিও অস্বীকার করেছে তৃণমূল। হুমকির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাকদহে বাড়ির সামনে মিলেছে বিজেপি কর্মীর লাশ। অন্যদিকে তৃণমূল কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জলপাইগুড়িতে ইভিএম নিয়ে ফেরার পথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতে বিজেপির পোলিং এজেন্টকে একই গাড়িতে দেখা যায় বলে দাবি তৃণমূল কর্মীদের।
ঘটনাস্থলে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার বিএসপি সদর গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই ঘটনায় পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ। প্রগতি ময়দান থানার খানাবাড়িয়া থেকে ছয়টি বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এন্টালী বিধানসভার অন্তর্গত ওই এলাকায় ভোটের আগে বোমা জড়ো করা হচ্ছিল কিনা, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য বিজেপির সায়ন্তন বসু ও তৃণমূলের সুজাতা মন্ডলের প্রচারে ২৪ ঘণ্টা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কমিশন। এর আগে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন।
আগামী ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাজ্যে ষষ্ঠ দফার ভোটে ৪৩ টি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের ভবিষ্যত নির্ধারিত হবে।