রাজ্যের উদ্বেগজনক করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রের সাহায্য চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চিঠিতে তিনি টিকা, অক্সিজেন ও ওষুধ নিয়ে মোদির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মমতা লেখেন, ‘দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকলকে একজোট হয়ে লড়তে হবে। এগিয়ে যাওয়ার এটাই একমাত্র উপায়।
‘ভ্যাকসিন, অক্সিজেন ও ওষুধের জোগানের নিশ্চয়তা প্রয়োজন। এই মুহূর্তে রাজ্যে পাঁচ দশমিক চার কোটি ভ্যাকসিন প্রয়োজন।’
প্রয়োজনীয় ওষুধ রেমডিসিভির জোগান ও অক্সিজেনের সরবরাহ দ্রুত বাড়ানোর আর্জিও জানান তিনি।
এদিকে ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় রাজ্যগুলোকে সব রকম সাহায্য করা হচ্ছে। এর মধ্যেই রেমডিসিভিরের উৎপাদন ও জোগান দ্বিগুণ করা হচ্ছে।
‘অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা এবং ভ্যাকসিনের নিয়মিত জোগান ও স্বাস্থ্য পরিষেবা বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করে কোভিড বেডের সংখ্যা বাড়ানো হবে।’
অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কী ব্যবস্থা নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ তা জানতে চেয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের উদ্দেশে টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
এরই মধ্যে রাজ্য সরকার স্বাস্থ্যসচিবের নেতৃত্বে চার সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করেছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নতুন করে ১১ দফা নির্দেশিকা জারি করেছে।
নির্দেশিকায় বলা হয়, গণপরিবহন ও জনবহুল স্থানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলকভাবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সপ্তাহে অন্তত একদিন স্যানিটাইজ করতে হবে।
রাজ্য সরকারের অফিসে ৫০ শতাংশের বেশি কর্মী যাতে না আসে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। শপিং মল, থিয়েটার ও রেস্তোরাঁয় থার্মাল স্ক্রিনিং ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। আর এসব বিধি লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর পরামর্শে স্থগিত করা হয়েছে জয়েন এন্ট্রান্স পরীক্ষা (জেইই) মেইন।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী তার সব রাজনৈতিক সভা বাতিল করে দিয়েছেন করোনার কারণে। তিনি বাংলার করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সব রাজনৈতিক দলের ভোট প্রচার বন্ধ রাখার পরামর্শও দিয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে করোনার সংক্রমণে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৪৫ হাজার ৩০০ জনের দেহে।