ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত করার প্রস্তুতি ইরান প্রায় সম্পন্ন করে এনেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
সংস্থাটি স্থানীয় সময় বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আইএইএ এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরান বলেছে নাতাঞ্জ পরমাণু কেন্দ্রে তারা আইআর-১ সেন্ট্রিফিউজ ১,০২৪ এর বেশি সক্রিয় করবে। এ বিষয়ে কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এটি শেষ হলেই নাতাঞ্জে সেন্ট্রিফিউজ কাজ শুরু হবে।
রোববার নাতাঞ্জ পরমাণু কেন্দ্রে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইরান বলছে, এই বিস্ফোরণে ইসরায়েলের হাত রয়েছে। ওই ঘটনার পরই মঙ্গলবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেয় ইরান, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
গত সপ্তাহে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ২০১৫ সালে সম্পাদিত পরমাণু চুক্তির বিষয়ে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসে জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, চীন ও রাশিয়ার প্রতিনিধি দল। এরই মধ্যে ইরানের প্রধান পরমাণু কেন্দ্রে হামলা হয়।
ইসরায়েলের সমালোচনা করে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, পরমাণু কেন্দ্রে হামলার সঙ্গে জড়িতদের জবাব দিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইসরায়েল আশা করেছিল, হামলার মাধ্যমে পরমাণু চুক্তিতে ফেরার বিষয়ে ভিয়েনায় চলমান আলোচনা বাধাগ্রস্ত হবে।
এদিকে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়ানোর সিদ্ধান্তে বুধবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলো।
চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য এক যৌথ বিবৃতিতে বলে, ‘উচ্চ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন পরমাণু অস্ত্র তৈরির গুরত্বপূর্ণ ধাপ। বেসামরিক প্রয়োজনে এত বেশি পরিমাণ ইউরেনিয়াম ইরানের দরকার নেই।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ঘোষণা প্ররোচনামূলক। এর মাধ্যমে ভিয়েনায় পরমাণুবিষয়ক চলমান আলোচনায় ইরানের আন্তরিকতা প্রশ্নের মুখে পড়বে।
ইরানের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব দেশটিকে এ পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলে, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এ মাত্রায় বাড়ানো কখনো শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে হতে পারে না। এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় আরও উত্তেজনা সৃষ্টি না করে চলমান আলোচনায় ইরানের গুরুত্ব দেয়া উচিত।