চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বরের আগেই আফগানিস্তান ছেড়ে দেশে ফিরবেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা।
স্থানীয় সময় বুধবার এ সংক্রান্ত ঘোষণা দেবেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্টসহ স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে তালেবানের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুসারে আসছে ১ মে আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহারের কথা ছিল ওয়াশিংটনের; যার বাকি আর দুই সপ্তাহ। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ সেনা প্রত্যাহার কঠিন বলে মনে করছে বাইডেন প্রশাসন।
আফগানিস্তানে তৎপর ধর্মভিত্তিক সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন তালেবানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোর অভিযোগ, এখন পর্যন্ত সহিংসতা কমানোর লক্ষ্যে কোনো শর্তই ঠিকঠাক পূরণ করতে পারেনি গোষ্ঠীটি।
সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া চলাকালীন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ওপর কোনো ধরনের হামলা হলে পূর্ণ শক্তিতে তার জবাব দেয়া হবে বলে তালেবানকে আগেই সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও ভার্জিনিয়ায় প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয় প্রায় তিন হাজার মানুষ। স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ ওই হামলার পরই আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন সরকার। ২০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই অভিযানে ইতি টানতে চান বর্তমান প্রেসিডেন্ট।
বিবিসি জানিয়েছে, জো বাইডেনের এ সিদ্ধান্তকে তাড়াহুড়া হিসেবে দেখছেন তার প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা।
বিদেশি ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দীর্ঘ এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি সেনা সদস্যকে হারিয়েছে দেশটি। খরচ হয়েছে কয়েক হাজার কোটি ডলার।
ন্যাটোর হয়ে বিভিন্ন দেশের সাড়ে নয় হাজারের বেশি সেনা এখনও নিযুক্ত রয়েছেন আফগানিস্তানে। এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সদস্যই প্রায় আড়াই হাজার।
পয়লা মের মধ্যে সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহার না হলে হামলা চালানো হবে বলে গত মাসে হুমকি দিয়েছে তালেবান।
অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি হওয়ার আগেই বিদেশি সেনা প্রত্যাহার হলে তালেবান আবারও আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
তালেবানের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার বলা হয়, আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে চলতি মাসের শেষ দিকে তুরস্কে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে তারা অংশ নেবে না।
টুইটারে তালেবানের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাঈম লিখেন, ‘আমাদের দেশ থেকে বিদেশি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আফগানিস্তানবিষয়ক কোনো ধরনের সম্মেলনে অংশ নেব না।’